সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরোতে নেমেছিলেন ১০০তম ম্যাচ খেলতে। স্মরণীয় ম্যাচটিতে পরেছিলেন ‘১০০’ লেখা জার্সিও। কিন্তু নেইমারের এমন আনন্দের পিঠে বিষাদ ভর করতে বেশিক্ষণ লাগেনি। আবারও যে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার!

মাঠে থাকতে পেরেছেন মাত্র ৩৪ মিনিট। এরপরই বাম ঊরুতে অস্বস্তি অনুভব করায় বদলি হওয়ার জন্য ইশারা করেন সান্তোসের ডাগআউটের দিকে। শেষ পর্যন্ত স্টাফদের সহায়তায় কার্টে উঠে মাঠ ছাড়েন নেইমার। সে সময় তার চোখ-মুখ ভিজে যাচ্ছিল কান্নায়।

এমন দৃশ্য অবশ্য নতুন নয়। নেইমারের পুরো ক্যারিয়ারই তো কেটেছে চোটের সঙ্গে যুদ্ধ করে। বুধবার রাতে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের শীর্ষ ফুটবল সিরি আয় অ্যাতলেতিকো মিনেইরোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরুর একাদশে ফিরেছিলেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। ম্যাচটিতে ২৭ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় সান্তোস।

এরপরই চোটে পড়েন নেইমার। পায়ে অস্বস্তি অনুভব করলেও চেয়েছিলেন খেলে যেতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইচ্ছে হার মেনেছে চোটের কাছে। অথচ চোট থেকে বাঁচতে কত কী করতে হয় নেইমারকে। দুই পায়ে ট্যাপ (ব্যান্ডেজ) পেঁচিয়ে মাঠে নেমেও রক্ষা পেলেন না এবার।

গত মার্চের শুরুতে ক্যাম্পিওনাতো পাউলিস্তার কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাগানতিনোর বিপক্ষে বাঁ ঊরুতে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন নেইমার। সেই চোটের পর সাইডলাইনে ছিলেন ছয় সপ্তাহ। মাঠে ফিরেছিলেন রবিবার সিরি আয় ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। মাঠে নেমেছিলেন বদলি হিসেবে।

তবে মিনেইরোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরুর একাদশে ফিরলেও প্রথমার্ধ পর্যন্তও খেলতে পারেননি নেইমার। কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়ার সময় সান্তোস তারকাকে সান্ত্বনা দেন সতীর্থ থেকে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরাও। মাঠ ছাড়ার পর বেঞ্চে বসে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন নেইমার। ঊরুতে দেন আইস প্যাক।

এবারের চোটে নেইমারকে কতদিন মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে সেটি এখনও জানা যায়নি। তবে সান্তোসের কোচ সিজার সামপাইও প্রতিবেদকদের বলেছেন, “নির্দিষ্ট উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সময়টা বেশ তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। আমরা এখনও কোনো ডায়াগনসিস করিনি। এমন ম্যাচে এটা বড় ক্ষতি, যেখানে আমরা সবকিছু পরিকল্পনা করেছিলাম এবং সবকিছুই প্রত্যাশামতো এগোচ্ছিল।”

তিনি আরও বলেছেন, “এখন আমাদের এটাই প্রার্থনা করতে হবে যে, যেন তাকে লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকতে না হয়।”

চোটের কারণে আল হিলালের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে চুক্তি বাতিল করে গত জানুয়ারিতে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরেছিলেন নেইমার। চেয়েছিলেন ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে সুস্থ হয়ে উঠতে। তাকে সবশেষ ব্রাজিলের জার্সিতে দেখা গেছে ২০২৩ সালের অক্টোবরে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাঁ হাঁটুতে এসিএলও এবং মেনিসকাস চোটে পড়েন তিনি।

এবারও কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচের জন্য ডাক পেয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু বাঁ ঊরুর চোটে গত মাসে ম্যাচ দুটিতে খেলতে পারেননি।