অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলের যাত্রাসঙ্গী এবার শামস-উল-হুদা একাডেমি

হিমু আক্তার
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৪

শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি।
২০১১ সালের ১৪ মে ফুটবলার তৈরির স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে যশোরের শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি। মাঝে কেটে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়। এত বছরে জাতীয় দল থেকে শুরু করে দেশের ঘরোয়া লিগের জন্য অনেক ফুটবলার উপহার দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি। এবার এই যাত্রার সঙ্গী হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দল।
আগামী ৯ থেকে ১৮ মে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে হবে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশ নেবেন বাংলাদেশের যুবারা। সাফের এই গুরুত্বপূর্ণ আসরকে সামনে রেখে প্রথমবার যশোরের শামস-উল-হুদা একাডেমিতে ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দল। ১৭ এপ্রিল থেকে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের অধীনে শুরু হবে যুবাদের এই ক্যাম্প, যার জন্য হয়েছে ট্রায়াল, এসেছেন প্রবাসী ফুটবলাররাও।
গত ১০ এপ্রিল বাফুফের সহসভাপতি ও ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর নেতৃত্বে সভায় এই ক্যাম্পের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভাশেষে বাফুফের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘আমাদের ফুটবলাররা ২৯ তারিখ পর্যন্ত ক্যাম্পে থাকবে। এরপর বিকেএসপির টার্ফে এক সপ্তাহ অনুশীলন করে ভারতে যাবে।’
শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমিতে বাংলাদেশ দলের ক্যাম্প হওয়াকে বিশেষভাবে দেখছেন মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তার ভাষায়, ‘আমাদের বর্তমান কমিটির উদ্দেশ্য ছিল, শুধু রাজধানী নয়, তার বাইরেও জেলা-উপজেলায় ফুটবলকে ছড়িয়ে দেওয়ার। সভাপতি তাবিথ আউয়ালও এ ব্যাপারে খুব গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই এই একাডেমিতে ফুটবলারদের ক্যাম্প উল্লেখযোগ্য তাৎপর্য বহন করবে। এটি জেলা পর্যায়ের ফুটবলকেও উজ্জীবিত করবে।’
অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানরাও ফুটবলার হবে, দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে, নিজেদের ক্যারিয়ার গড়বেÑএমন হাজারও স্বপ্ন নিয়ে গড়ে উঠে
শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি; ছোট্ট একটি স্কুল মাঠ থেকে যা হয়ে উঠেছে একটি আদর্শ ফুটবল একাডেমি। সেখানে বিনা খরচে ফুটবলের সঙ্গে পড়াশোনাও করছে শিক্ষার্থীরা, রয়েছে আবাসন সুবিধাও।
একাডেমির ভাষাসৈনিক মুসা মিয়া ভবনে ২৪০ জন শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা আছে। এতে আন্তর্জাতিক মানের মাঠ থেকে শুরু করে জিমনেসিয়াম, সাঁতার কাটার ব্যবস্থা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, আধুনিক কনফারেন্স রুমসহ সব ব্যবস্থাই আছে, রয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও।
১০ বছর বয়স থেকেই যেকোনো কিশোর চাইলে নিজের স্বপ্নযাত্রা শুরু করতে পারে এই একাডেমি থেকে। ১৬ বছর পর্যন্ত রয়েছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ। তবে সেখানে আবাসিক-অনাবাসিক দুই উপায়েই ফুটবলাররা নিতে পারবে প্রশিক্ষণ।
মফস্বল শহরে এই একাডেমি তৈরির কারিগর নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। যেখানে আবাহনী-মোহামেডানের মতো দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলো নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ একাডেমি গড়তে পারেনি, সেখানে একার চেষ্টায় সেটা করে দেখিয়েছেন তিনি। নীরবে ফুটবলার উপহার দিয়েই যাচ্ছেন এই সংগঠক। ফুটবল একাডেমিটিও পেয়েছে কাজের স্বীকৃতিও। বছর বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসপিএ) সেরা ক্রীড়া সংস্থার পুরস্কার জিতে নিয়েছে এটি। স্বীকৃতি পাওয়া সবে তো শুরু, সামনে হয়তো এই একাডেমির শো-কেসে জমা হবে আরো স্বীকৃতির স্মারক।