দীর্ঘ ছয় ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক। প্রথমে নিজেদের মধ্যে, এরপর বিসিবিপ্রধান ফারুক আহমেদসহ বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়লেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রশ্ন তোলেন তাওহিদ হৃদয়ের শাস্তি পাওয়ার ইস্যু এবং ক্রিকেটারদের সবার সামনে ভিন্নভাবে উপস্থাপন ইস্যুতে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তামিম বলেন, ‘‘আজকে আমরা যে কারণে সবাই এখানে একসঙ্গে হয়েছি, সেটা হচ্ছে গত দুই তিন চার মাসের কিছু কিছু ইন্সিডেন্ট ঘটছে। যেটি নিয়ে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের মনে একটা প্রশ্ন ছিল। তারা খুবই হতাশ ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি দুইটা তিনটা পয়েন্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারব।’’

এর মধ্যে প্রথমটি হলো তাওহিদ হৃদয়কে দেওয়া শাস্তির ইস্যু। তামিম বলেন, ‘‘প্রথম কথা তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে একটা ঘটনা হয়। তাকে প্রথমে দুইটা ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয়। যখন নিষেধাজ্ঞা দেয় তখন কোনো প্লেয়ার বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলে নাই। এটা নিয়েও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পরে দেখলাম যে দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। এটা বিসিবি করেছে, তখন আমরা কোনো ধরনের কোনো কথা বলিনি। গতকাল আবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটা কোন রুলে কীভাবে করছে- আমার কাছে জানা নেই। এটা খুব হাস্যকর। এটা কোনোভাবেই নিষেধাজ্ঞা হতে পারে না।’’

তাওহিদের নিষেধাজ্ঞা তুলতে মোহামেডানের কোনো চাপ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন, ‘‘মোহামেডান থেকে প্রেশার দিয়ে খেলানো হয়েছে কি হয়নি- এটা গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিসিবি তাকে খেলার অনুমতি দিয়েছে কি না। যদি বিসিবি অনুমতি দেয়, তাহলে সে শাস্তি ভোগ করেছে। যে ছেলে তার শাস্তি ভোগ করে, সে একই অপরাধের জন্য আবার কীভাবে শাস্তি পেতে পারে। এই বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা বুঝিয়েছি আমরা কী ফিল করি। তারাও তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’

শুক্রবার ছুটির দিনে মাঠে ব্যস্ততা নেই। কিন্তু আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দৃশ্য ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সকাল থেকে একে একে হাজির হয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ও ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটাররা। উদ্দেশ্য—একটি বিশেষ বৈঠক।

সকাল ১১টা থেকেই ক্রিকেটারদের আগমন শুরু হয়। প্রায় সোয়া ১২টার দিকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তার সঙ্গে পরে যোগ দেন তাওহিদ হৃদয়, নুরুল হাসান সোহান, সাব্বির রহমান, শরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, সাইফ হাসান, সাইফ উদ্দিন, জিয়াউর রহমান, নাসুম আহমেদসহ অনেকে। ছিলেন একাদিক সাবেক ক্রিকেটারও। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবের কর্তাদেরকেও দেখা যায়।

স্টেডিয়ামের একাডেমি ভবনে বসে প্রায় দেড় ঘণ্টার দীর্ঘ মিটিং করেন ক্রিকেটাররা। এরপরেই সেখানে পৌঁছান বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। দুই পক্ষের বৈঠক শেষে ক্রিকেটাররা নিজেদের অবস্থা স্পষ্ট করলেও বোর্ডের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।