‘বৈষম্যের শিকার’ জিম্বাবুয়ে এ বছর খেলবে অস্ট্রেলিয়ার সমান টেস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ১৯:১৮

জিম্বাবুয়ে টেস্ট দল। ছবি: জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট
এ বছর নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান খেলবে সমান পাঁচটি করে টেস্ট। বাংলাদেশ খেলবে ছয়টি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলবে সাত টেস্ট আর সাউথ আফ্রিকা আটটি। সমান ১০টি করে টেস্ট খেলবে ভারত ও ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া খেলবে ১১ টেস্ট।
৯ দলই সাদা পোশাকে তাদের সব ম্যাচ খেলবে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে। তবে সেই টুর্নামেন্টের অংশ না হয়েও অস্ট্রেলিয়ার সমান টেস্ট খেলবে জিম্বাবুয়ে।
২০২৫ সালে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ ১১ টেস্ট খেলবে জিম্বাবুয়েনরা। সাম্প্রতিক সময়ে এক বছরে তারা এত টেস্ট খেলেছিল কবে! টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ না হলেও আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে টেস্ট আয়োজন করে চলেছে জিম্বাবুয়ে।
অবশ্য এই আয়োজনে তাদের কেউ বাধ্য করছে না। তবে নিজেদের ক্রিকেটের সোনালি দিন ফেরাতে চেষ্টার কমতি রাখছে না জিম্বাবুয়ে। এ নিয়ে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের চেয়ারম্যান তাভেংওয়া মুখুলানি বলেন, “আমি মনে করি, পূর্ণ সদস্যদের অবশ্যই তিন সংস্করণে খেলা উচিত। এটি যোগ্যতার মানদণ্ডের অংশ। আমরা এমন একটি দেশ, যারা ১০০-এর (এখন পর্যন্ত ১২৩ টেস্ট) বেশি টেস্ট খেলেছি। অতএব আমরা টেস্ট খেলুড়ে জাতি।”
২০০৬ সালে অভ্যন্তরীণ সংকট ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে বোর্ডের দ্বন্দ্বের কারণে স্বেচ্ছায় টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ে। এরপর ফেরে ২০১১ সালে। ফেরার পর গত ১৪ বছরে আফ্রিকার দেশটি এখন পর্যন্ত খেলেছে ৪০ টেস্ট—গড়ে বছরে তিনটিরও কম।
এর মধ্যে ২০১৫ ও ২০১৯ সালে খেলেনি একটি টেস্টও। ফেরার পর এক পঞ্জিকাবর্ষে জিম্বাবুয়ে সর্বোচ্চ ছয় টেস্ট খেলেছে ২০১৩ সালে। আর ফেরার আগে এক বছরে সর্বোচ্চ ১১ টেস্ট খেলেছে ২০০১ সালে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ১৯৯২ সালে প্রথম টেস্ট খেলে জিম্বাবুয়ে।
নিজেদের ইতিহাসে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১১ টেস্ট এ নিয়ে দুবার খেলবে জিম্বাবুয়েনরা। ২৪ বছর আগের সেই পঞ্জিকাবর্ষে দলটি চার জয়ের পাশাপাশি হেরেছিল চার টেস্ট। ড্র তিনটি।
এ বছর এরইমধ্যে চার টেস্ট খেলে ফেলেছে জিম্বাবুয়ে। তার মধ্যে বুলাওয়েতে দুটি আর বাংলাদেশে দুটি। সিলেটে জয় পেলেও বাকি তিনটিতে হেরেছে। নিজেদের মাটিতে আরও ছয়টি টেস্ট আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে জিম্বাবুয়ের।
এ মাসে একটি টেস্ট খেলতে ইংল্যান্ড সফরেও যাবেন ক্রেইগ আরভিন-সিকান্দার রাজারা। এটি তাদের ঐতিহাসিক সফরও। ২০০৪ সালের পর প্রথমবার ইংল্যান্ডে যাবে আর ২০০৭ সালের পর প্রথমবার ইংলিশদের বিপক্ষে যেকোনো সংস্করণে প্রথমবার মুখোমুখি হবে জিম্বাবুয়ে।
এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, মর্যাদা থাকলেও টেস্টে জিম্বাবুয়ে কতটুকু মর্যাদা পাচ্ছে টেস্ট খেলুড়ে বড় দলগুলো থেকে। জিম্বাবুয়েনরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলেছে ২০০৩ সালে, ভারতের বিপক্ষে ২০০৫ সালে, আর প্রতিবেশী সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০১৭ সালে।
এই কারণে নাখোশ মুখুলানি। এভাবে বঞ্চিত হওয়াকে ‘অপ্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য’ বলেও মন্তব্য করেছেন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের চেয়ারম্যান। সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, কোনোভাবেই খেলাধুলার জগতে এমন বৈষম্য থাকা উচিত নয়।