ক্রিকেট দুনিয়ায় লরেন বেল নামটি এখন বেশ পরিচিত। ৬ ফুট উচ্চতার এই ফাস্ট বোলার কেবল গতি দিয়েই নয়, মাঠে ‘স্টাইলিশ’ উপস্থিতিতে নজর কাড়ছেন সবার। অথচ মাত্র ২৪ বছর বয়সী এই তারকাকে ফুটবল মাঠে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। শৈশবে তার স্বপ্ন ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে খেলা-ক্রিকেট নয়, ফুটবলই ছিল তার প্রথম প্রেম।
বেল পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করে বলেছেন,সাত-আট বছর বয়সেও তিনি ফুটবল বুট পরে দৌড়াদৌড়ি করতেন। তার কাছে খেলাধুলা মানেই ছিল আনন্দ। আট বছর বয়স পর্যন্ত তিনি রিডিং এফসির হয়ে ফুটবল খেলেছেন। সে সময় তার মা-বাবা ক্রিকেট ও ফুটবল-দুটির অনুশীলনই সামলাতেন।
২০১৭ সালে আসে সেই কঠিন মুহূর্ত। কিয়া সুপার লিগের দল সাদার্ন ভাইপার্স বেলকে তাদের শীতকালীন কর্মসূচির জন্য চুক্তি অফার করে। কিন্তু সমস্যা হলো, এই দলের প্রশিক্ষণ ছিল শনিবার সকালে, যা তার ফুটবল ম্যাচের সময়ের সঙ্গে মিলে যেত। তার মা-বাবা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শারীরিক কারণে দুই জায়গায় একসঙ্গে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই তাকে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে।
তখনই বেল নিলেন জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত। তিনি বেছে নিলেন ক্রিকেটকে। বেলের ভাষায়, ‘তখনই সিদ্ধান্ত নেই, আমি ক্রিকেটই খেলে যাব। তারপর থেকে আর ফুটবল খেলিনি। সেটা একটু কষ্টের, কিন্তু তার পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাইনি।’ ফুটবলকে বিদায় জানানোর সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, বেল তা প্রমাণ করেছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে। বর্তমানে ইংল্যান্ডের হয়ে তিন সংস্করণেই খেলছেন তিনি। সম্প্রতি মেয়েদের দ্য হান্ড্রেডে প্রথম বোলার হিসেবে ৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও গড়েছেন।
তবে শুধু পারফরম্যান্স নয়, ফ্যাশন সচেতন হিসেবেও বেল সুপরিচিত। হাতে ব্রেসলেট পরে তার লম্বা রানআপ এবং বোলিংয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ইংল্যান্ড এখন তাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অন্যতম ফাস্ট বোলার হিসেবে দেখছে, যিনি গতির পাশাপাশি গ্ল্যামারকেও সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ২২ গজে। ফুটবলার হওয়ার কথা ছিল যার, সেই মেয়েটিই আজ ক্রিকেটের সবচেয়ে ‘স্টাইলিশ’ ফাস্ট বোলার।
