ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর ‘অ্যাডহক’ যুগ কি তবে শেষ হতে চলেছে? দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) এক নির্দেশনার মাধ্যমে সেই ইঙ্গিতই দিয়েছে। ৪৯টি ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনকে ‘অনতিবিলম্বে’ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ জারি হওয়ায় দেশের ক্রীড়া প্রশাসনে এখন শুরু হয়েছে নানা জল্পনাকল্পনা-এই নির্বাচনের মাধ্যমে কি তবে শক্তিশালী ও স্থায়ী নেতৃত্ব পাবে ক্রীড়াঙ্গন?
বিসিবি বা বাফুফের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার গাইডলাইন মেনে চলা ফেডারেশনগুলো বাদে বাকিদের নির্বাচন এনএসসির নির্দেশনায় হয়। এবার সেই এনএসসির আকস্মিক নির্দেশেই নড়েচড়ে বসেছেন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। নির্বাচনের এই নির্দেশনার পেছনে এনএসসির যুক্তি পরিষ্কার। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) মোহাম্মদ আমিনুল এহসান বলেন, ‘অনেক ফেডারেশন আছে যেগুলোর বয়স বছর হয়ে গেছে। তাই নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। অ্যাডহক কমিটি মানেই তাদের নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। আমরা তো লম্বা সময়ের জন্য অ্যাডহক কমিটি রাখতে পারি না।’
অথচ অ্যাডহক কমিটি গঠনের মূল প্রজ্ঞাপনে নির্বাচন নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না। ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ধরে নিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন, তাদের কার্যকালও ততদিন। এনএসসি ‘অনতিবিলম্বে’ শব্দটি ব্যবহার করলেও সময়সীমা সুনির্দিষ্ট না করায় এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পরিচালক আমিনুল এহসান বলেন, ‘আমরা কোনো সময় বেঁধে দেইনি। কারণ সব ফেডারেশনের প্রেক্ষাপট এক নয়।’
কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় সাংগঠনিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে কাউন্সিলর নির্বাচন নিয়ে। ফেডারেশনের নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে আসবেন জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে। অথচ দেশের বেশির ভাগ জেলা ও বিভাগীয় সংস্থাই চলছে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচিত কমিটি না থাকলে এই অ্যাডহক কমিটি থেকে কারা কাউন্সিলর হয়ে ফেডারেশনগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করবেন? এই সমস্যার সমাধান না হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতা বা আইনি জটিলতার মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।
