
পারভেজ হোসেন ইমন
বয়সভিত্তিক যেকোনো দল থেকেই কোনো না কোনো পর্যায়ের ভবিষ্যতের তারকাদের বের হতে দেখা যায়। তেমনি একজন পারভেজ হোসেন ইমন। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা দলটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
এবার সুযোগ পেয়ে আলো ছড়ালেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি আসরে। ৪২ বলে সেঞ্চুরি করে দেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি করে ফেলেছেন উনিশ না পেরুনো এই খেলোয়াড়। তামিম-সাকিবরা যা পারেননি, তা-ই করে দেখালেন ইমন।
টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা ৩৫ বলের, কিন্তু বাংলাদেশের হিসাব করলে সবার উপরেই রয়েছেন ইমন। এতদিন দ্রুততম শতকের রেকর্ডটি ছিল তামিম ইকবালের, ২০১৯ বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। সেটিকে আট বলে কমিয়ে করেছেন ইমন।
কাপড় ব্যবসায়ী বাবার ছেলে ইমন। ক্রিকেটে তার শুরুর গল্পটা কিছুটা অন্যরকম। ইমনের বড় ভাই ফয়সালের বন্ধু জিসান। তার সাথেই এলাকার অলিতে-গলিতে ক্রিকেট খেলে বেড়াতেন ইমন। অন্যদের চেয়ে ভালো খেলার কারণে জিসান বন্ধু ফয়সালকে বলে তার ভাইকে বিকেএসপিতে ভর্তি করে দিতে। ২০১৩ সালে ইমন বিকেএসপিতে ভর্তি হন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত যুব এশিয়া কাপে সুযোগ পাননি তিনি। পরের শ্রীলঙ্কা সফরেও সুযোগ মেলেনি। পরপর দুটি প্রতিযোগিতায় সুযোগ না পেয়ে হতাশায় ভেঙে পড়লে পাশে দাঁড়ান বিকেএসপির কোচ আসাদুল হক টুটুল। তাকে জোর করে অনুশীলন করান ও অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেটের একটি টুর্নামেন্টেও খেলতে বাধ্য করেন। ওই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ৯৬ রানের ইনিংসই নতুন ‘জীবন’ দেয় ইমনকে। এই ইনিংসই সুযোগ করে দেয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রস্তুতি ম্যাচের দলে। ওই ম্যাচেও খেলেন ৯৬ রানের আরেকটি ইনিংস। পরপর এমন দুটি ইনিংস জায়গা করে দেয় তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ দলে। এরপরের ঘটনা তো ইতিহাস, যা বিশ্বকাপ জয়ের কল্যাণে সবারই জানা।
করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরটি সবার জন্য বেশ বাজে হলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য কিন্তু এক কথায় দারুণ ছিল। বছরের শুরুতেই অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে এটাই বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। অবশ্য যেকোনো খেলাতেই বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ জয় এটি। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্জিত এমন সাফল্য পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে চান যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের ক্রিকেটাররা।
বিশ্বকাপ জেতার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন যুব বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটাররা। সম্প্রতি শেষ হওয়া তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টে তাদের নিয়ে বেশ আগ্রহ ছিল; কিন্তু সুযোগ পাওয়া আটজনের সবার পারফরম্যান্সই ছিল সাদামাটা। আপাতত সব কিছু পেছনে ফেলে সামনের পাঁচদলীয় টোয়েন্টি-২০ টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি নিতে চান এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
বিশ্বকাপের পর ইংলিশ কোচ টবি র্যাডফোর্ডের তত্ত্বাবধানে মিরপুরের একাডেমিতে ২৬ ক্রিকেটারকে নিয়ে নিবিড় অনুশীলন হাই-পারফরম্যান্স ইউনিটের।