দেশের ফুটবলের অনেক ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নাম। এখন ফুটবলের জন্য হলেও এটি একটা সময় ছিল ক্রিকেটের ভেন্যু। স্বাধীনতার আগে এখানে নিউজিল্যান্ড খেলে গেছে। সারা দুনিয়ায় পরিচিত এই স্টেডিয়ামে যেমন বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, ঠিক তেমনি ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই স্টেডিয়ামে ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছিল মিনি বিশ্বকাপের। আর ফুটবলের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের মতো অনেক বড় বড় আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২০০৩ সালে সাফ ফুটবলে শিরোপা জেতার পর ২০১০ সালে এসএ গেমসের ফুটবলে স্বর্ণ জিতেছে বাংলাদেশ এই স্টেডিয়ামে; কিন্তু দিনে দিনে আয়ু কমেছে, বেড়েছে ব্যস্ততা। সারা দুনিয়ার সেরা সেরা স্টেডিয়ামগুলোর সঙ্গে এখন আর টেক্কা দিতে পারছে না এটি। সে কারণেই নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল কয়েক মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রোমো আপলোড করেছিলেন। সেখানে দেখা গেছে অনেক পরিবর্তন করে সংস্কার কাজের পর কেমন হতে পারে স্টেডিয়ামটি সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন করে অ্যাথলেটিক ট্র্যাকও স্থান পেয়েছে। ধাপে ধাপে কাজ করার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে আছে। যাতে করে মাঠের খেলায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেদিকে খেয়াল রেখেই সবকিছু করা হবে বলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সূত্রে জানা গেছে। 

করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর পিছিয়ে এখন নতুন করে এলইডি লাইট, অ্যাথলেটিক ট্র্যাক ও মাঠের উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। প্রেসিডেন্ট বক্স আর স্টেডিয়ামের ভিআইপি জোন সংস্কার দিয়ে শুরু হবে কাজ। এরপর দ্বিতীয় ধাপে এলইডি লাইট, নতুন করে গ্যালারির ওপর শেড নির্মাণ ও জায়ান্ট স্ক্রিনের কাজ করা হবে। আর শেষ ধাপে মূল মাঠ ও অ্যাথলেটিক ট্র্যাকের উন্নয়ক কাজ করা হবে। সংস্কার কাজের জন্য ৯৮ কোটি টাকার বাজেট ধরা হয়েছে। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল পরিচালনাকারী এএফসির নীতিমালা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ফুটবল চালানোর জন্য স্টেডিয়ামে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও পরিবেশ না থাকায় এই নিষেধাজ্ঞা আসার একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন নিজেই এমন শঙ্কার কথা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। ফুটবলসহ বিভিন্ন ইভেন্ট এখানে হলেও স্টেডিয়ামটি ফিফার মানসম্মত নয়। 

সংস্কারের বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, ‘ফুটবল খেলাও চলবে, কাজও চলবে। খেলা কিছু দিনের জন্য স্থগিত না হলে কাজ শুরু করা যাবে না। স্টেডিয়ামে মাঠসহ গ্যালারির আরও অনেক কাজ রয়েছে’। 

স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন করার বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল জানিয়েছেন, ‘পুরো স্টেডিয়ামটিতে শেড দিতে চাচ্ছি। পাশাপাশি স্টেডিয়ামের ড্রেসিং রুম, মিডিয়া সেন্টার, ডক্টরস রুম, প্রেসিডেন্ট বক্স, ভিআইপি বক্স, গ্যালারি, টয়লেটগুলো আধুনিকায়ন করা হবে’।