Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

নিয়মিত টুর্নামেন্টে স্বপ্ন বাড়ছে দাবায়

Icon

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:২৩

নিয়মিত টুর্নামেন্টে স্বপ্ন বাড়ছে দাবায়

নিয়াজ মোরশেদ

নিভৃতচারী খেলা হলেও বাংলাদেশ দাবায় সবসময়ই সম্ভাবনাময় ছিল। উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টারও যে একজন বাংলাদেশি, তিনি নিয়াজ মোরশেদ। তার প্রতিভা নিয়ে ভারতের জগদ্বিখ্যাত গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথ আনন্দ বলেছিলেন, নিয়াজ তার চেয়েও প্রতিভাবান দাবাড়ু ছিলেন। নিয়মিত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে খেলাটির সঙ্গে থাকতে পারলে আনন্দের চেয়েও সফল খেলোয়াড় হতেন বলে মন্তব্য করেছিলেন। 

এ কথা থেকেই বোঝা যায়, দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কতটা সম্ভাবনাময় ছিল। করোনাকালীন সময় পার করে এখন নিয়মিত টুর্নামেন্টই ইনডোর এই খেলাটির স্বপ্ন বাড়াচ্ছে। সর্বশেষ ফিদে অনলাইন দাবা অলিম্পিয়াডের ডিভিশন-২-এর ‘এ’ পুলে খেলেছে বাংলাদেশ। ১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়ার পর ১৯৮৭ সালে ভারত উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হন নিয়াজ। আর সর্বশেষ এই খেতাবটি অর্জন করেন ২০০২ সালে দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার হন জিয়াউর রহমান। চার বছর পর ২০০৬ সালে তৃতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার হন রিফাত বিন সাত্তার। এই সময়টাকে দাবার জন্য সুসময়ই বলতে হবে।

পরের বছরই ২০০৭ সালে চতুর্থ গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাব লাভ করেন আবদুল্লাহ আল রাকিব। ২০০৮ সালে দেশের পঞ্চম আর শেষ গ্র্যান্ডমাস্টার হন এনামুল হোসেন রাজীব। এরপর থেকেই শূন্যতা ভর করেছে দেশের দাবা অঙ্গনে। আশার হয়ে আছেন দেশের সর্ব কনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক মাস্টার হিসেবে খেতাব পাওয়া মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান। সর্বশেষ বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে নিয়াজ মোরশেদ দারুণ খেলেছেন। বড় কোনো সাফল্য না পেলেও তার বুক চিতিয়ে লড়াই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পাথেয় হয়ে আছে। এরপরই অনলাইন দাবায় সপ্তম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ। ১০ দলের মধ্যে বাংলাদেশ ৯ খেলায় ৭ পয়েন্ট পেয়েছে। আসরের শেষ দিন সপ্তম রাউন্ডের খেলায় বাংলাদেশ ১.৫-৪.৫ গেম পয়েন্টে সেনজেন চায়নার কাছে হেরে যায়। অষ্টম রাউন্ডের খেলায় ৪.৫-১.৫ গেম পয়েন্টে চাইনিজ তাইপেকে হারালেও নবম বা শেষ রাউন্ডের খেলায় ৫.৫-০.৫ গেম পয়েন্টে ফিলিপাইনের কাছে হেরে যায়। 

এই আসরে বাংলাদেশ দলের হয়ে অংশ নেন গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান, রিফাত বিন সাত্তার, আন্তর্জাতিক মাস্টার মোহাম্মদ মিনহাজউদ্দিন, মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান, ফিদে মাস্টার সুব্রত বিশ্বাস, আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ, শারমীন সুলতানা শিরিন, মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার আহমেদ ওয়ালিজা, মহিলা ফিদে মাস্টার তনিমা পারভীন, নোশিন আঞ্জুম ও কাজী জারিন তাসনিম। তার আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় শেখ কামাল আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা প্রতিযোগিতা। শেখ কামালের জন্মদিনে তিন দিনব্যাপী ৯ রাউন্ড সুইস-লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এ ইভেন্টে ১৫ টি দেশের ২১ জন গ্র্যান্ডমাস্টার ও ১৩ জন আন্তর্জাতিক মাস্টারসহ মোট ৮০ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন। যদিও এই আসরে বাংলাদেশের তিনজন গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে খুব ভালো করতে পারেনি কেউ।

করোনাকালীন এই সময়ে ইনডোর গেমস হিসেবে পরিচিত দাবা বোর্ডের চেয়ে বেশি অনুষ্ঠিত হয়েছে অনলাইনে। তবে বিশ্বকাপের মতো আসর ঠিকই সরাসরি অন বোর্ডে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন দারাড়ুরা। বাংলাদেশ থেকে গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ ও জিয়াউর রহমান রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত সেই আসরে খেলেছিলেন। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে শেখ কামাল অনলাইন আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতা। কলেবর আর প্রাইজমানিতে এটি অনেক বড় আসর ছিল। ১০ হাজার ডলারের প্রাইজমানির দাবা আসর আয়োজনে ফেডারেশনের এমন উদ্যোগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল স্পন্সর প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন আবার দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি পদেও রয়েছেন। 

শেখ কামালের নামে দাবা ফেডারেশনের এই আয়োজনটা এবারই প্রথম। নতুন গ্র্যান্ডমাস্টার খোঁজার লক্ষ্য নিয়ে অনলাইন দাবা প্রতিযোগিতা শেষে সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ হতে শেখ কামালের নামে দেশব্যাপী দাবা টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে। টুর্নামেন্টে নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান, আবদুল্লাহ আল রাকিব ও এনামুল হোসেন রাজীবকে পেলেও অনুপস্থিত থাকেন রিফাত বিন সাত্তার। নতুন করে দাবা ফেডারেশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রাসেলের নামে আরও দুটি আসর আয়োজন করতে যাচ্ছে। দুটিতেই পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। নতুন গ্র্যান্ডমাস্টারের পাশাপাশি দাবা নিয়ে বড় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক আসরগুলো আয়োজন করা হচ্ছে। আশা করা যায় এ আয়োজনে ঘুচতে পারে নতুন একজন গ্র্যান্ডমাস্টার পাওয়ার অপেক্ষা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫