জেমি-অস্কার যা পারেননি সেই চ্যালেঞ্জে লেমোস

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২১, ১৫:৪৫

ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সাফল্য অপেক্ষা হয়েই থেকে যাচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য। সর্বশেষ সাফে ফাইনালে উঠতে না পারার ব্যর্থতার পর এবার তা ঘোচাতে শ্রীলঙ্কা গেছে জাতীয় ফুটবল দল। সেখানে মাহিন্দ রাজাপাকশে চারদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই লঙ্কাভূমে পা রেখেছে লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা।
জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোসের ঘোষণা করা দলে নতুন চমক কাতার প্রবাসী ফুটবলার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ওবায়দুর রহমান নবাব। যিনি গত মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) কয়েকটি ম্যাচ খেলেছেন। এর আগে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অস্কার ব্রুজোন কোচ ছিলেন। তার আগের তিন বছর জামাল ভূঁইয়াদের ওস্তাদ হিসেবে কাজ করলেও বড় সাফল্য দেখাতে পারেননি। এবার সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন লেমোস। এবার প্রত্যাশা শ্রীলঙ্কায় ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙবে।
এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপ ০-২ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কা যে ছেড়ে কথা বলবে না, তা তারা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেই মাঠে প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশের কাছে পেনাল্টি গোলে পরাজয় বরণ করেছে তারা। এ ছাড়া ড্র করে চ্যাম্পিয়ন ভারতকে রুখে দিয়েছে। এখন ঘরের মাঠে তারা ভয়ংকর হয়ে উঠবে না, তা কি বলা যায়। শিসেলস সম্পর্কে জামালদের তেমন কোনো ধারণাই নেই। ছোট অথচ চার জাতি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলে বাংলাদেশের ফুটবলে কিছুটা হলেও প্রাণ সঞ্চার হবে।
এদিকে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘খেলায় হারজিত আছে। হতাশা নেই। আমার বিশ্বাস ফুটবলে বাংলাদেশ জাগবেই। একটা সাফল্য চাই। পাশাপাশি ফাইনালে উঠলেই কেবল দলের খেলা দেখতে শ্রীলঙ্কায় যাব আমি’।
সাফের ফাইনালে খেলা স্বপ্ন নিয়ে মালেতে গেলেও আগের চার আসরের মতো বিদায় নিতে হয়েছে গ্রুপপর্ব থেকে। দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপখ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এবার আশাজাগানিয়া পারফরম্যান্স করেও একরাশ হতাশাকে সঙ্গী করে দেশে ফিরতে হয়েছে জামাল ভূঁইয়ার দলের। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সাফ মিশন শুরু করার পর ১০ জনের দল নিয়েও লড়াই করে ভারতের সঙ্গে ড্র করে বাংলাদেশ। এরপর মালদ্বীপের বিপক্ষে পরাজিত হলেও ফাইনালে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ নেপাল ম্যাচে উজবেকিস্তানের রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বলি হয়ে ফাইনালে খেলা হয়নি অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যদের।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ২২ দিন পরই শুরু হয়েছে এ টুর্নামেন্ট। ৮ নভেম্বর সিসেলসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের চার জাতির টুর্নামেন্টের যাত্রা শুরু করে। পরের দুই ম্যাচে ১১ ও ১৪ নভেম্বর প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ ও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। সব ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে কলম্বোর রেসকোর্স স্টেডিয়ামে। টুর্নামেন্টের জন্য জাতীয় দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু হলেও সেটি কম সময়ের জন্যই হয়েছে। তবে সাফের মতো এই আসরের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে সম্মতি জানাননি কোচ অস্কার ব্রুজোন। পরে আবাহনী কোচ মারিও লেমোসকে কোচ হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়।
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন সাফের ফাইনাল ও কংগ্রেসে যোগ দিতে মালদ্বীপে গিয়েছিলেন। দ্বীপরাষ্ট্রটি থেকে দেশে ফিরে কোচের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে আরেকটি টুর্নামেন্টের জন্য দায়িত্ব দেওয়ার চেষ্টা ছিল। মালে ছেড়ে দেশে ফিরে অল্প কয়েক দিনের বিশ্রাম নিয়েই আবার ৮-১৭ নভেম্বর শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় আমন্ত্রণমূলক চার জাতি টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতিতে নেমে পড়তে হয়েছে জামাল ভূঁইয়ার দলকে। মালদ্বীপ ও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগে মাঠে নামলেও আফ্রিকার সিসেলসের বিপক্ষে আগে কখনোই খেলেনি বাংলাদেশ দল। তবে একেবারেই অপরিচিত দল নয় তারা। ফিফা বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ১৯৯-এ থাকা দেশটি ২০২০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খেলে গেছে।