বরেণ্য ক্রীড়া সংগঠক শামস্-উল হুদার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৫০
শামস্-উল-হুদা
যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, সাধারণ সম্পাদক ও দেশ বরেণ্য ক্রীড়া সংগঠক শামস্-উল-হুদার আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে জেলা ক্রীড়া সংস্থা, পরিবার ও শামস্ উল হুদা ফুটবল একাডেমির পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিল ও এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে আজ সোমবার আসর বাদ সংগঠনের কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া পরিবারের পক্ষ থেকে দুপুরে এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
আগামীকাল মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সদরের হামিদপুরের শামস্ উল হুদা ফুটবল একাডেমির নিজস্ব কার্যালয়ে আসর বাদ মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।
শামস্-উল-হুদা দলে গোল রক্ষক হিসেবে খেলতেন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই ১৯৩০ সালে সম্মিলনী ইনস্টিটিউটের হয়ে ফুটবল খেলে দক্ষতার পরিচয় দেন। আর এ নৈপূণ্যতার কারণে তৎকালীন ‘চিত্তরঞ্জন ক্লাব’ তাকে খেলার সুযোগ দেয়। পরবর্তীতে তিনি জেলা দল ও যশোর ফুটবল লিগে টাউন কাব, যতীন্দ্র মোহন কাব ও ইয়ং মুসলিম কাবে নৈপূণ্যেরে সঙ্গে খেলেন।
১৯৩৯ সালে যশোরে জিলা স্কুলে অধ্যয়নকালে আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় অল বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
শামস উল হুদা খেলোয়াড়ের চেয়ে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে বেশি সফলতা পান। তিনি ‘ইয়াং মুসলিম ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। ১৯৫০ সালে তার সহযোগিতায় গঠিত হয় ‘যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থা’। এর দুই বছর পর থেকে আমৃত্যু তিনি সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে পালন করেন।
এছাড়া যশোরে অনুষ্ঠিত হয় অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলা। তার সুদক্ষ পরিচালনায় যশোর জেলা ফুটবল ১৯৭৬ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ওই বছর ঢাকার বাইরে সর্বপ্রথম যশোরে জাতীয় এ্যাথলেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন তিনি।
তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার পাশাপাশি অনেক জাতীয় দায়িত্বও পালন করেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ড, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ও খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতা পূর্বকালে তিনি ‘ইস্ট পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশন’র সদস্য ছিলেন।
ক্রীড়াঙ্গণের পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতে ছিলেন সক্রিয়। ছাত্রজীবনে মুসলিম স্টুডেন্ট লীগ পরবর্তীতে মুসলিম লীগের জেলা সহ-সভাপতি হন। এছাড়া তিনি যশোর ইনস্টিটিউট, শিল্পকলা একাডেমি, রেডক্রস ও যশোর কাবের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি এনএম খান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মাহামুদুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়, পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, বিএভিএস, উপশহর কলেজের সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ‘যশোর রেলওয়ে’, মহিলা কলেজ, নব কিশলয় কিন্ডার গার্টেন স্কুল, মোমিন গার্লস স্কুল, ও যশোর আলিয়া মাদ্রাসার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
১৯৭৭-৭৮ এ বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি শ্রেষ্ঠ সংগঠক হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৮৭ এতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তাকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করে। ১৯৮৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি পৃথিবী ছেড়ে চিরবিদায় নেন।
