স্বরূপে ফিরছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি। মাঝে পেরিয়ে গেছে অনেকটা সময়, ৭২১ দিন! ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর সময় হয়েছিল বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজ। ভরা গ্যালারিতে ওটাই ছিল সর্বশেষ সিরিজ। এরপর করনোর কারণে বেশ কিছুদিন খেলা বন্ধ থাকার পর পুনরায় শুরু হলেও দর্শকহীন মাঠে খেলা গড়ায়।

করোনাভাইরাসের কারণে বিপিএলের অষ্টম আসর শুরু থেকে দর্শকশূন্য মাঠে হয়। শেষের দিকে দর্শক ফিরলেও অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখেই ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা হয়েছিল। তবে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) শুরু হতে যাওয়া দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে শতভাগ দর্শক থাকবে গ্যালারিতে। ২৬ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটিতে সব আসন পূর্ণ হওয়া খবরে উচ্ছ্বাসে মেতেছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু টিকিট নিয়ে সর্বত্রই হাহাকার, একটি টিকিটের আশায় ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকরা হন্যে হয়ে ঘুরছেন।

চার-ছক্কার যুগে টি-টোয়েন্টির জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। দর্শক আগ্রহের কথা চিন্তা করে বুধবার থেকে টিকিট বিক্রি শুরু করছে বিসিবি। এদিন সকাল ৯টা থেকেই মিরপুর সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে নিদিষ্ট বুথে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। সকাল থেকে টিকিট কাউন্টারের সামনে ক্রিকেটপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট সংগ্রহ করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। দিনশেষে সোনার হরিণ টিকিট পেয়ে অনেকে দারুণ খুশি, অনেকের কণ্ঠে আবার আক্ষেপ।

রুদ্ধ নামের এক শিক্ষার্থী কিছুটা দেরি করে এসেছিলেন টিকিট সংগ্রহ করতে। কিন্তু সারাদিন কষ্ট করেও টিকিট পাননি। বিকাল থেকে স্টেডিয়াম এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন টিকিটের কোনও সোর্স যদি পাওয়া যায়!

নিরাশ কন্ঠে তিনি বলেছেন, ‘অনেকদিন বাংলাদেশের ম্যাচ দেখি না। কালকে (বৃহস্পতিবার) আমরা কয়েকজন কাজিন মিলে খেলা দেখবো ভেবেছিলাম। কিন্তু টিকিট পাইনি। প্রায় ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাইনি। কালকে আবার কেনার চেষ্টা করবো। এখানে এসেছিলাম যদি কোনোভাবে পাওয়া যায় আর কী।’

আবিদ নামের এক শিক্ষার্থী টিকিট পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী মেহেরপুর থেকে এসেছি কোচিংয়ের জন্য। টিকিট নিতে পেতে আমরা খুব খুশি। আশা করি কাল ভালো একটা খেলা উপভোগ করতে পারবো।’

করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই মাঠে দর্শক ছিল না। কিছু টুর্নামেন্ট ও সিরিজে দর্শক ফিরলেও সেটি সামন্যই বলা যায়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দীর্ঘ দুই বছরের খরা কাটছে। দর্শকদের স্বাগত জানাতে পুরো স্টেডিয়ামও প্রস্তুত। ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়েছে গ্যালারির চেয়ারগুলো। দীর্ঘদিন পর মাঠে যাওয়ার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকরা। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে ৯টা থেকে টিকিট দেওয়া হলেও ভোর থেকেই শুরু হয় দর্শকদের আনাগোনা। ৬টা না বাজতেই লাইনে দাঁড়িয়ে যান তারা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লম্বা হয়েছে লাইন। দুপুর ১২টা বাজার আগেই শেষ হয়ে যায় সাধারণ গ্যালারির ১০০ টাকা মূল্যের টিকিট।

এবারের সিরিজে টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য ১০০ টাকা। এই পরিমাণ টাকা খরচ করলে দর্শকেরা ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন ইস্টার্ন স্ট্যান্ড থেকে। নর্থ ও সাউথ স্ট্যান্ডের টিকিটের দাম ১৫০ টাকা। এছাড়া ক্লাব হাউজের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন ৩০০ টাকা খরচ করে। ভিআইপি স্ট্যান্ডে খেলা দেখতে হলে খরচ করতে হবে ৫০০ টাকা। আর সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা দিয়ে খেলা দেখা যাবে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড থেকে।