
হ্যাটট্রিক করে এই অঞ্জন বিস্তাই হারিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশকে
এই তো কদিন আগে নেপালের কাঠমান্ডুর এই দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে জিতেছে প্রথম বারের মতো নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। সেই আনন্দের রেশ এখনো কাটেনি। বিজয়ী নারীরা এখনো সংবর্ধনার বৃষ্টিতে ভাসছেন। এরই মধ্যে নেপালের সেই দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ব্যর্থ বাংলাদেশ জাতীয় (পুরুষ) ফুটবল দল।
আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশ ৩-১ গোলে হেরেছে নেপালের কাছে। নেপালের হয়ে তিনটি গোলই করেছেন অঞ্জন বিস্তা। মানে প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে সান্ত্বনার একমাত্র গোলটা করেছেন সাজ্জাদ। অসাধারণ ড্রাইভিং হেডে গোলটা করেছেন তিনি।
নিজেদের মাঠে সাফ ফাইনালে মেয়েদের হারটা মেনে নিতে পারেনি নেপাল। আজকের প্রীতি ম্যাচে সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার পণ করেই হয়তো নেমেছিল স্বাগতিক নেপাল। প্রতিশোধের আগুনটা তারা নিভিয়েছেও। কাকতালীয়ভাবে, মেয়েরা যে ব্যবধানে জিতেছিল, নেপালের ছেলেরাও সেই ৩-১ গোলেই জিতেছে। অথচ মেয়েদের ঐতিহাসিক অর্জনে অনুপ্রাণিত হয়ে নেপালকে হারানোর স্বপ্নের কথাই শুনিয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা।
প্রথমার্ধেই ৩ গোল খেয়ে বসায় সম্ভাবনা জেগেছিল আরও বড় পরাজয়ের। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোয় তা হয়নি। মেয়েদের হারের প্রতিশোধ নেওয়ার কামনা থেকেই কি না, আজ ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে নেপাল। মাঠের লড়াইয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে আদায় করে নিয়েছে একের পর এক গোল।
নেপাল প্রথম লিড পায় ম্যাচের ১৮ মিনিটে। কর্ণার থেকে নেওয়া বাঁ-পায়ের বাঁকানো ফ্রি কিকে ফ্লাইট মিস করেন বাংলাদেশ দলের ডিফেন্ডারসহ গোলরক্ষক জিকো। অঞ্জন বিস্তার হেডে এগিয়ে যায় হিমালয়ের দেশটি। ২৬ মিনিটে আবারও জামাল ভূঁইয়াদের মাথা নিচু। সেই অঞ্জন বিস্তার পা ছুঁয়েই নেপালের ২-০। নেপালের গোলরক্ষক লম্বা করে কিক নেন। বাংলাদেশের অর্ধ থেকে এক হেডে বল যায় কর্ণারে। সেখান থেকে এক পাসে বক্সে এবং গোলে শট। বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো শটটি ফিরিয়েও দেন। কিন্তু তিনি শট ঠেকিয়ে দিলেও বল চলে যায় নেপালের স্ট্রাইকার অঞ্জন বিস্তার পায়ে। তিনি ফিরতি শটে ঠিকই বল বাংলাদেশের জালে জড়িয়ে দেন।
এরপর ৩৭ মিনিটে আবার নেপালের খেলোয়াড়দের উল্লাস। এবারও ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করেন অঞ্জন বিস্তা। ক্যারিয়ারের এটাই তার প্রথম হ্যাটট্রিক। অঞ্জন বিস্তাকে থামানোর কোনো উপায়ই যেন বাংলাদেশের রক্ষণের জানা ছিল!
দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ৫৫ মিনিটে সাজ্জাদের অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ব্যবধানও কমায়। কিন্তু পরে একের পর এক আক্রমণ গড়েও আর গোল আদায় করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।