
ইনডোর গেমস দাবা । ছবি: সংগৃহীত
ইনডোর গেমস দাবা
বেশ জনপ্রিয়। একটা সময় দাবায় এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই হেঁটেছে
বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, ভারত উপমহাদেশের
প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাবটা জিতেছিলেন বাংলাদেশের নিয়াজ মোরশেদ। ভারত তখন
যোজন পিছিয়ে ছিল। অথচ ভারত তরতর করে উপরে উঠে গেছে। আর আমরা হাঁটছি হামাগুড়ি দিয়ে।
এখন ভারতের ধারেকাছেও নেই লাল সবুজের দেশটি।
সেই যে
গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যা পাঁচে এসে ঠেকেছে, এখান থেকে সংখ্যাটা বৃদ্ধির কোনো খবরই নেই।
দাবা অঙ্গনে এখন একটিই প্রশ্ন, আবার কবে একজন গ্র্যান্ডমাস্টার পাবে বাংলাদেশ। নিয়াজ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হন ১৯৮৭ সালে। সেই বছরই ভারত প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে পায় বিশ্বনাথন আনন্দকে।
পরে রেকর্ড পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া বিশ্বনাথন আনন্দ এখনো দাবায় সক্রিয়। আর নিয়াজ?
তার ধারেকাছেও নেই।
সময়ের হিসাবে ৩৫
বছরে বাংলাদেশ আটকে আছে পাঁচজন গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যায়। অথচ এই সময়ে ভারত পেয়ে গেছে তাদের ৭৬তম জিএম। বেঙ্গালুরুর ১৫ বছরের
টিনএজার প্রণব আনন্দ এই সম্মান পেয়ে নিজের পাশাপাশি দেশকে গর্বিত করেছেন।
আর বাংলাদেশের
পাঁচজন গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে এনামুল হোসেন রাজীব শেষবার এই খেতাব পেয়েছিলেন ২০০৮ সালে। তারপরের সময়টা একরাশ
হতাশায় কেটে গেছে। বাংলাদেশের দাবা বিশেষজ্ঞ ও দাবা অ্যাডজুডিকেটর হিসেবে হারুন উর
রশিদ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে খেলাটির সঙ্গে জড়িয়ে। দেখেছেন অনেক উত্থান-পতন। তবে
শেষটাই তাকে বেশি করে হতাশ করেছে। কষ্ট নিয়ে বলেন, ‘ভারত যেভাবে দাবায় দ্রুত উন্নতি করেছে এর মূলে
রয়েছে বছরজুড়ে সর্বোচ্চ আর নিয়মিত টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ। সম্প্রতি ইউরোপ ছাড়াও
আবুধাবি ও দুবাইয়ে দাবার আসরে অর্ধেকেরও বেশি প্রতিযোগী ছিল ভারতের। কলকাতায়ও
দেখেছি বাবা-মা সন্তানদের দাবা শেখানোর জন্য প্রচুর অর্থ খরচ করে চলেছেন।’
কীভাবে বাংলাদেশও এই পথে হাঁটতে পারে জানতে চাইলে দাবায় সবার প্রিয় হারুন ভাই বলেন, ‘বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সামর্থ্য সীমিত। শুধু ফেডারেশনের দিকে তাকিয়ে থাকলে কোনোদিনই উন্নতি সম্ভব না। ঢাকার বাইরে জেলা পর্যায়েও কিছু কাজ করতে হবে। দাবায় আমাদের পিছিয়ে পড়ার আরেকটি কারণ, এখন ছেলেমেয়েদের মধ্যে কমিটমেন্ট আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।’ বাংলাদেশে রেটেড দাবাড়ু মাত্র ১৮০০ জন। আর সারা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৩ হাজার রেটিংপ্রাপ্ত দাবা খেলোয়াড় রয়েছেন পাশের দেশ ভারতে! এসব পরিসংখ্যান শুধু আক্ষেপই বাড়ায়।