
কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: সংগৃহীত
কিলিয়ান এমবাপ্পে, বিশ্ব ফুটবলে বর্তমান সময়ের সাড়া জাগানো এক নাম। গোল করার দক্ষতায় যিনি অসম্ভব পারদর্শী। এবার কাতার বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের ভিড়ে এই এমবাপ্পে দর্শকদের মনে তার অবস্থান উজ্জ্বলতায় ভরে রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিগত এক বছরে তার যে নৈপূণ্য ছিল, তাতে যে বিশ্বকাপে দর্শকদের চোখ থাকবে এমবাপের দিকে- এতে কোনো সন্দেহই নেই।
পুরো নাম কিলিয়ান এমবাপ্পে লোঁত্তা। মাত্র ২৩ বছর বয়সে এমবাপ্পে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছেন। ২০১৭ সালে ফ্রান্স জাতীয় দলে অভিষেক। এ পর্যন্ত ৫৯ ম্যাচ খেলে ২৮টি গোল করেছেন। বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স যদি শিরোপা ধরে রাখতে পারে, তা হলে তো কথাই নেই। দল শিরোপা ধরে রাখতে না পারলেও পিএসজির মেসি- নেইমারদের সতীর্থ এমবাপ্পে বিশ্বকাপের ‘গোল্ডেন বুট’ জিতলে তা হবে একটি স্বাভাবিক বিষয়।
জাতীয় দলের হয়ে যে ২৮টি গোল করেছেন, তার ৫টি গোল এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে। বাছাইপর্বে তার প্রতিটি গোলই ছিল চমৎকার ও চোখ ধাঁধানো। ফ্রান্সের শীর্ষ লিগের (লিগ ওয়ান) সর্বশেষ আসরে (২০২১-২০২২) এমবাপ্পে ২৮টি গোল করেছেন। তিনিই হয়েছেন লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। দারুণ ফর্মে থাকা এমবাপ্পের মাঠে নামা মানেই গোল। ক্লাব বা জাতীয় দলের প্রতিপক্ষদের মূল টার্গেটই থাকে এমবাপ্পেকে আটকানো। তার পরও প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভেদ করে বল জালে জড়াতে সিদ্ধহস্ত এমবাপ্পে।
প্যারিসে ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণকারী এমবাপে ডিবলিং, স্পিড ও জালে বল পাঠানো নিয়ে নিজস্ব একটা ফর্মুলা তৈরি করেছেন। জাতীয় দলে অভিষেকের দুই বছর আগেই ক্লাব লেভেলে সিনিয়র পর্যায়ে খেলা শুরু। ২০১৫ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই মোনাকোর হয়ে লিগ ওয়ানের শিরোপা জয়ের অংশীদার হন। ১৮ বছর বয়সে যোগ দেন বর্তমান ক্লাব পিএসজিতে। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে তিনি হন ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী গোলদাতা।
ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের পর বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা। ওই বিশ্বকাপে এমবাপ্পে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। জিতেছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার। শুধু কি তাই, ফিফার বিশ্ব একাদশে জায়গা পান ২০১৮ ও ২০১৯ সালে। উয়েফার সেরা একাদশেও ছিলেন ২০১৮ সালে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেরা একাদশেও এমবাপ্পে ছিলেন তিনবার। ২০২১ সালে ‘গ্লোব সকার বেস্ট প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার লাভ করেন। লিগ ওয়ানে চার মৌসুমের সেরা গোলদাতা এই এমবাপ্পে। এমন একজনের দিকে দর্শকদের কৌত‚হলী দৃষ্টি তো থাকবেই।
তার ছোটবেলার আদর্শ স্বদেশি জিনেদিন জিদান। তবে ব্রাজিলের রোনাল্ডো নাজারিও এবং পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও তার প্রিয় খেলোয়াড়। আজ এমবাপ্পে নিজেই হাজারো উঠতি ফুটবলারের আদর্শ। কাতার বিশ্বকাপের পর তার ভক্ত-অনুরাগীর সংখ্যা নিশ্চয়ই বাড়বে।