
লিওনেল মেসি ও নেইমার। ছবি: সংগৃহীত
এক রাতে মাত্র ৪ ঘন্টার ব্যবধানে লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়র মাঠে নেমেছিলেন। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ব্রাজিল হারলেও এখনো টিকে আছে আর্জেন্টিনা। শেষ আটের ম্যাচে সেলেসাওরা ক্রোয়েশিয়ার কাছে আর আলবিসেলেস্তরা জিতেছে নেদারল্যান্ডের কাছে। ২০০২ সালের পর থেকে ইউরোপের দলগুলো যে ব্রাজিলের জন্য অনেক বড় প্রতিপক্ষ সেটা আবারো প্রমাণিত হলো।
মেসি ও নেইমার দুজনেই কোয়াটার ফাইনালে গোল পেয়েছেন। অথচ দারুণ গোল করে নেইমার এগিয়ে দিলেও ম্যাচটা জিততে পারেনি। একমাত্র উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ ছাড়া কাতার বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে গোল পেয়েছেন সব বড় তারকাই। পোল্যান্ডের রবার্ত লেভানদভস্কি এই বিশ্বকাপে প্রথম গোল করলেন সৌদি আরবের বিপক্ষে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর টানা ৫ বিশ্বকাপে গোল ছিল ঘানার বিপক্ষে। লিওনেল মেসি এবং কিলিয়ান এমবাপ্পেরা নিয়মিত গোল পাচ্ছিলেন।
আশা থাকলেও কিন্তু গোল পাচ্ছিলেন না নেইমার। সার্বিয়ার বিপক্ষে রিচার্লিসনোর জোড়া গোলে জয়। সেই ম্যাচেই আহত হয়ে গ্রুপ পর্বের পরের দুই ম্যাচ মিস করেন নেইমার। তাই গোল করার সুযোগই ছিল না। অবশেষে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে নেমেই গোলের দেখা পেলেন পিএসজির এই ফরোয়ার্ড। তা পেনাল্টি থেকে। বিপক্ষ গোলরক্ষককে বাম বোকা বানিয়ে বল জালে পাঠান তিনি। বিশ্বকাপে এটি তার সপ্তম গোল। সেই সাথে ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে তার করা গোল এখন ৭৭টি। জীবন্ত কিংবদন্তি পেলের ৭৭ গোলকে ছুঁতে আর মাত্র একটি গোল দরকার এই পিএসজি স্ট্রাইকারের। তবে এরই মধ্যে তিনি স্পর্শ করেছেন স্বদেশী পেলে এবং রোনালদো নাজারিওকে। তা তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বকপে গোল করার ক্ষেত্রে।
অথচ এই দুই ফুটবলার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বকাপে গোল করেছেন। কোরিয়ার বিপক্ষে বল জালে পাঠিয়ে নেইমারও এখন তিন বিশ্বকাপে গোল করা ফুটবলার। ২০১৪, ২০১৮ এর পর ২০২২ এর বিশ্বকাপে। এদিন মাঠে বসে নেইমারের সেই কীর্তিই রিভালদো, কাফু এবং রবার্তো কার্লোসকে সাথে নিয়ে দেখলেন বড় রোনালদো। পেলে গোল করেছেন টানা চার বিশ্বকাপ ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালে। রোনালদো নাজারিও গোল করেছেন ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০০৬ বিশ্বকাপ আসরে। নিজ মাঠে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু নেইমারের। সেবার তার গোল ছিল ৪টি। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে অভিষেকেই তার জোড়া গোল। মেক্সিকোর বিপক্ষে গোল না পেলেও ক্যামেরুনের বিপক্ষে ফের তার দুই গোল। সেবার দলকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত টেনে নেন।
এরপর ইনজুরির জন্য মিস করেন জার্মানদের বিপক্ষে সেমিফাইনাল। রাশিয়া বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে হেরে বিদায় নেয়ার আগ পর্যন্ত উজ্জ্বল ছিল তার পারফরম্যান্স। গ্রুপ পর্বে কোস্টারিকার বিপক্ষে এবং দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকোর একটি করে গোল ছিল তার। কোরিয়ার বিপক্ষে তার গ্রেটেস্ট শোন অন আর্থে সাত নাম্বার গোল। পরের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জালের সন্ধান পেলেই পেলেকে টপকে যাবেন তিনি। টপকে যাবার বিষয়টি এখন কিছুটা অপেক্ষার মধ্যে পড়ে গেছে। তবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়াটা ছিল বেশি কষ্টের।