Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের রেফারি ‘ইলেক্ট্রিশিয়ান’

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৫৮

আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের রেফারি ‘ইলেক্ট্রিশিয়ান’

দানিয়েল ওরসা। ছবি: সংগৃহীত

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেও যেন থামছে না বিতর্ক। এই অবস্থার মধ্যে কোয়াটার ফাইনালে আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ড ম্যাচে ১৮টি হলুদ হার্ড দেখিয়েছেন রেফারি। ভাগ্য ভালো আর্জেন্টাইন কোচ স্কলোনি, সহকারী কোচ ও লিওনেল মেসি লাল কার্ড দেখেননি বলে ভাগ্য ভালো! 

আজকের প্রথম সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে রেফারি নিয়ে তাই একটু বেশি আগ্রহ ফুটবল প্রিয়দের। জানা গেছে এই ম্যাচের দায়িত্বে থাকা দানিয়েল ওরসাতো একজন ইলেকট্রিশিয়ান! বৈদ্যুতিক বাল্ব কেন জ্বলে, কেনই বা নেভে? শৈশবে এ বিষয়ে বেশ আগ্রহ ছিল তার। চাইতেন বড় হয়ে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি হবেন। পরিকল্পনামাফিক শেষ করলেন পড়াশোনাও। এরপরই স্বপ্নপূরণে হয়েও গেলেন ইলেক্ট্রিশিয়ান। স্বপ্নপূরণের পর এক সহকর্মীর পরামর্শে রেফারিংয়ের প্রশিক্ষণ নিলেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ফিফার অনুমোদিত রেফারি হয়ে গেলেন।

বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদীতে যার আবেগ আটকে ছিল সেই দানিয়েল ওরসাতো এখন বিশ্বের প্রথম সারির একজন রেফারিদের একজন। ফিফা জানিয়েছে, বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে প্রধান রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন ওরসাতো। তার দুই সহকারী রেফারিও দুই ইতালিয়ান সিরো কারবোনে ও আলেসান্দ্রো জিয়াল্লাতিনি। চতুর্থ অফিসিয়াল হিসেবে থাকবেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ। প্রধান রেফারি দানিয়েলে ওরসাতো ২০০২ সালে ইতালিয়ান সিরিআ’য় পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০১০ সালে ফিফার তালিকাভুক্ত রেফারি হন তিনি। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ইলেক্ট্রিশিয়ান ছিলেন ওরসাতো।

দর্শকদের কৌতূহল মেটাতে এক সাক্ষাৎকারে এই ইতালিয়ান রেফারি বলেন, ‘নিজের কৌতূহলী মণ বাল্ব কেন অন হয়, ছোটকালে এ নিয়ে আগ্রহী ছিলাম আমি। আমার লক্ষ্যই ছিল বড় হয়ে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি হবো। ইতালির ট্রিসিনো ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারে পড়াশোনা শেষ করলাম এবং চাকরিতে ঢুকে গেলাম।’ এই রেফারি আরও বলেন, ‘তবে ফুটবলটা ছিল আমার ভালবাসার জায়গা। টুল-বক্স হাতে অফিসের জন্য রওয়ানা দিলাম একদিন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম, আমি আমার লক্ষ্যপূরণ করেছি।’

অবশ্য ওরসাতো স্বপ্নপূরণের পর হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি যে রেফারিংয়েই প্রতিষ্ঠিত হবেন তিনি। বিশ্বকাপে এবারই প্রথম নয়; ২০১৮ আসরেও দায়িত্ব পালন করেছেন দানিয়েলে ওরসাতো। রাশিয়া বিশ্বকাপে ভিডিও অ্যাসিস্ট রেফারি ছিলেন তিনি। ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ-পিএসজির মধ্যকার ম্যাচে প্রধান রেফারি ছিলেন ওরসাতো। কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন দানিয়েলে ওরসাতো। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে কাতার বনাম ইকুয়েডর ম্যাচ পরিচালনা করেন তিনি। সে ম্যাচে দুই দলের ৬ খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখান ওরসাতো। এরপর গ্রুপপর্বে আর্জেন্টিনা-মেক্সিকো ম্যাচও পরিচালন করেন তিনি। ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়কে ৫ হলুদ কার্ড দেখান ওরসাতো।

যার একটি দেখান আবার আর্জেন্টিনার গঞ্জালো মন্তিয়েলকে। পরে কোয়ার্টার ফাইনালেও এক হলুদ কার্ড দেখেন মন্তিয়েল। এ জন্য  আজ খেলতে দেখা যাবে না এ আর্জেন্টাইন রাইট-ব্যাককে। কাতারে ২২তম বিশ্বকাপ আসরে রেফারিং নিয়ে হচ্ছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। কোয়ার্টার ফাইনালের দুই ম্যাচে ফুটবলাররা রেফারিদের নিয়ে নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা অকপটে জানিয়েছেন। ফিফা এবার সতর্ক সেমিফাইনাল ম্যাচ নিয়ে। আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়ার প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচটি পরিচালনার জন্য তাই এবার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইতালিয়ান রেফারি দানিয়েল ওরসাতোকে। ভালো রেফারি হিসেবে বেশ সুনাম রয়েছে তার। এবারের বিশ্বকাপ ফাইনাল পরিচালনার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য রেফারির তালিকাতেও তার নাম রয়েছে।

যদিও কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্ব ও কোয়ার্টার ফাইনালের কোনো ম্যাচেই তাকে দেখা যায়নি। বিশ্বকাপ আসরে উদ্বোধনী দিন স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের ম্যাচে তিনি রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার ২-০ ব্যবধানে মেক্সিকোর বিপক্ষে জয়ের ম্যাচেও তিনি ছিলেন রেফারি। দুই দলের অনেক ফুটবলার ইতালিয়ান লিগে খেলেন। তাই এই কারণে রেফারি ওরসাতোকে বেশ ভালোভাবেই জানেন ফুটবলাররা। এ ছাড়া তার ক্যারিয়ারে তিনি তিনবার ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে রেফারি ছিলেন। যেখানে মডরিচরা দুইবার জয়লাভ করেছে ও আরেকটি ম্যাচে ইউরো ২০২০ এ ইংল্যান্ডের কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরেছিল ক্রোয়েশিয়া। আজ অবশ্য তার সেই ভাব থাকবে বলে প্রত্যাশা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫