যে কারণে রানার্সআপ হয়েও সংবর্ধনা পেল ফ্রান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:২৫
ছবি: সংগৃহীত
ফাইনালে জয়ের খুব কাছে গিয়ে ফিরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো। সে কারণে ৩৬ বছর পর শিরোপা জয় করা আর্জেন্টিনাকে নিয়েই বেশি মাতামাতি হচ্ছে। এদিকে রানার্সআপ হওয়া ফ্রান্স দেশে ফিরে পেল দারুণ সংবর্ধনা।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠার কারণেই ফরাসী সরকার হুগো লরিসের দলকে সম্মাননা জানানো হয়। সে কারণে বীরের সম্মানই পেলেন এমবাপ্পেরা। ইতালি ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপ জেতার খুব কাছে চলে গিয়েছিল ফ্রান্স। টাইব্রেকারে শেষ মুহূর্তে স্নায়ু ধরে রাখতে না পারায় হার মানতে হয় তাদের। ঘটনাবহুল ও নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচকে ‘নিষ্ঠুর’ বলছেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। আর এই নিষ্ঠুর ফাইনালে হেরেও প্যারিসে নেমে সমর্থকদের উষ্ণ সংবর্ধনা পেয়েছেন তারা। জিততে পারলে ইতালি (১৯৩৪ ও ১৯৩৮) ও ব্রাজিলের (১৯৫৮ ও ১৯৬২) পর তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুই বিশ্বকাপ জয়ের নজির গড়ত ফ্রান্স। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।
ম্যাচটা অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত ম্যাচ ছিল ৩-৩ গোলে। পরে টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনা ৪-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়। বিফলে যায় এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক। কাতারের দোহা থেকে সোমবারই প্যারিসে ফিরেন ফরাসি ফুটবলাররা। বিমানবন্দরে তারা পেয়েছে মানুষের সমর্থন। পরে সেখানে টিএফওয়ানকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় দিদিয়ের দেশম মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ফ্রান্সের সব নারী-পুরুষকে ধন্যবাদ দেয়া আমাদের এভাবে সমর্থন দেয়ার জন্য। এই সমর্থন আমাদের শক্তি যুগিয়েছে। আমরা একটা আবেগ তাড়িত সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। শেষটা যদিও হয়েছে নিষ্ঠুর। যা আমাদের আহত করেছে।’
দলের অধিকাংশ ফুটবলারকে অবশ্য স্বাভাবিক দেখিয়েছে। ফুটবলারদের স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন কয়েক হাজার সমর্থক। অনেকের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। প্রিয় ফুটবলারদের জার্সি পরেও গিয়েছিলেন অনেকে। বিমান থেকে নামার সময়ই এমবাপ্পের মুখ ছিল থমথমে। পরেও তার মুখে হাসি দেখা যায়নি। বিমান থেকে প্রথম নামেন অধিনায়ক হুগো লরিস ও কোচ দিদিয়ের দেশম। তাদের পর একে একে নামেন ফুটবলার এবং অন্যরা। বিমানবন্দর থেকে গোটা দলকে নিয়ে যাওয়া হয় প্যারিসের বিখ্যাত প্লেস দে লা কনকর্ডের কাছে একটি হোটেলে। সেখানে ভিড় করেছিলেন লক্ষাধিক সমর্থক। সমানে চিৎকার করে তারা সমর্থন জানাচ্ছিলেন। ফুটবলারদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছিলেন।
ফুটবলাররা হোটেলের বারান্দায় এসে সমর্থকদের দিকে হাত নাড়েন, জনতার উৎসাহে কয়েকজন ফুটবলারকে হাসতে দেখা গেলেও এমবাপ্পেকে বিধ্বস্ত দেখিয়েছে, ফাইনালের হারের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এবার বিশ্বকাপে গিয়েছিল ফ্রান্স। এবারো তারা ছিল হট ফেভারিট। কিন্তু টুর্নামেন্টের আগে বেশ কয়েকজন সেরা তারকাকে তারা হারায় চোটের কারণে। ফাইনালের আগেও কয়েকজন খেলোয়াড়ের অসুস্থতা ভোগায় ফ্রান্সকে। এত কিছুর পরও শেষ অবধি লড়াই চালানোয় খুশি দেশম, ‘বিশ্বকাপের আগে ও মাঝে অনেক কঠিন পরিস্থিতি পার করতে হয়েছে আমাদের। তবু ছেলেরা দারুণ চেষ্টা চালিয়েছে।’ আর অধিনায়ক হুগো লরিস জানান, আগামীতে সেরার স্বীকৃতি ফিরিয়ে আনতে চান তারা। আপাতত দলটির লক্ষ্য ২০২৪ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। জার্মানিতে হতে যাওয়া আসরটিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতে চায় ফ্রান্স।