ডি মারিয়া নায়ক হয়েও আর্জেন্টিনা ফুটবলের পার্শ্বচরিত্র

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:২৫

ডি মারিয়া। ছবি: সংগৃহীত
আর্জেন্টিনার ফুটবলে রথী-মহারথীর অভাব নেই। দিয়াগো ম্যারাডোনা, লিওনেল মেসি, আলফ্রেডো ডি স্টেফানোরা তো মহানায়ক। এছাড়া ক্লদিও ক্যানিজিয়া, মারিও ক্যাম্পেস কিংবা গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতারা নায়কের আসনে আসীন।
যে তালিকায় আনহেল ডি মারিয়ার নাম খুঁজে পাওয়া অনেকটাই দুষ্কর। অথচ এই ডি মারিয়ার মাধ্যমেই এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে আর্জেন্টিনার সব শিরোপার শেষ সমাধান।
১৯৯৩ সালের কোপা আমেরিকা জয়ের পর আর্জেন্টিনা শিরোপা জিততেই ভুলে গিয়েছিল। জগৎ সেরা লিওনেল মেসিও পারছিলেন না দেশকে আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতাতে। শেষ পর্যন্ত মারিয়াই আর্জেন্টিনার ‘মুশকিল আসান’ হয়ে এসেছেন। ২০২১ সালে যার একমাত্র গোলে আর্জেন্টিনা ২৮ বছর পর জয় করে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা, কোপা আমেরিকা। পরের বছর ইউরোপ-ল্যাটিনের লড়াই ‘লা-ফিনালিসিমাতে’ও ইতালির বিপক্ষে গোল করলেন মারিয়া।
২০২২ সালে এলো বিশ্বকাপ জয়ের মাহেন্দ্রক্ষণ। ইনজুরি আক্রান্ত থাকায় সেমিফাইনালে না খেলা মারিয়া পুরো আসরে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ফাইনালে সুস্থ হয়ে ফিরেই মেলে ধরেছেন নিজেকে। যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, বিচরণ করেছেন ‘রাজা’র মতো। যেন বলতে চেয়েছেন, ‘হ্যাঁ আমিই ডি মারিয়া। আর্জেন্টিনার বড় আসরের ত্রাণকর্তা’। ফ্রান্সের বিপক্ষে নিজে গোল করলেন, এনে দিলেন একটি পেনাল্টি। মারিয়া যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, ফ্রান্স কোনো লড়াইয়েই ছিল না।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ফাইনালে ওঠার ক্ষেত্রেও ছিল মারিয়ার অবদান। নকআউট পর্বে সুইসদের বিপক্ষে একমাত্র গোল করেছিলেন। কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে গঞ্জালো হিগুইনের একমাত্র গোলে অ্যাসিস্ট করেছেন। কিন্তু ইনজুরির কারণে সেমিফাইনাল আর ফাইনালে ছিলেন না মারিয়া। আর্জেন্টিনা পরবর্তী দুই ম্যাচে গোলের দেখাই পায়নি। সেমিতে হল্যান্ডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জিতলেও শেষরক্ষা হয়নি জার্মানির বিপক্ষে ফাইনালে। এখনো ফুটবল দর্শকদের বিশ্বাস, ফাইনালে ডি মারিয়া থাকলে আর্জেন্টিনাকে নিরাশ হয়ে ফিরতে হতো না।
২০০৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক ফাইনালে মারিয়ার একমাত্র গোলে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে স্বর্ণপদক পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ২০০৭ সালে আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জয়ে তিন গোল করে রেখেছিলেন বড় অবদান। গোল করেছিলেন সেমিফাইনালেও। মোট কথা, সাম্প্রতিক সময়ে আর্জেন্টিনার যে কোনো সাফল্যে শেষ তুলির আঁচড় দিয়েছেন আনহেল ডি মারিয়া। অথচ শেষ দৃশ্যে বিজয়ী নায়ক ডি মারিয়া আর্জেন্টিনা ফুটবলে রয়ে গেছেন ‘পার্শ্বচরিত্র’ হয়ে।