Logo
×

Follow Us

গল্প

তিনটি অণুগল্প

Icon

আলী এহসান

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:৩২

তিনটি অণুগল্প

প্রতীকী ছবি

পরকীয়া

---পরের বাঁশিতে সুর তুলে নিজের বিপদ ডাকিস না?
---মানে?
---মন চাইলে নিজের ঝাড়ে যখন খুশি কোপ দিস, কেউ ফিরাও চাইব না।
---কী বলছিস! তোর মারফতি কিছুই বুঝতাছি না।
---ঘটনা রটলে কিন্তু মৌচাকে ঢিল পড়ব! হুলের যন্ত্রণা সইতে পারবি তো? 
আশ্চর্য! এ কী বলছে সুমন? ওর ইঙ্গিতে কোন বিপদ লুকিয়ে? মতির সাথে ওর লটপটের বিষয়ে নয় তো! মতির স্বামী বিদেশ। 

তার নদীতে যৌবনের নৌকো বাইছে সে। তাহলে কি ফিরে যাবে! কিন্তু সেটা কি ঠিক হবে? কথা দিয়েছে আজ যাবে। না গেলে কী করে হয়?

চুপি চুপি এসে মতির দরজায় টোকা দিতেই কে যেন পেছনে থেকে চেপে ধরে তার কাঁধ! ঘাড় ফেরাতেই দেখে রহিম প্রধান! 

তার পেছনে উঠোনে আরও অনেকে। রফিকের অনুভবে শুরু হয় প্রলয় তাণ্ডব। সে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে জনতার দিকে। আজ আর রক্ষে নেই।

উদ্বাস্তু

জন্মভিটে থেকে উচ্ছেদের কষ্ট তোমরা কি বুঝবে?
তোমাদেরকে তো কেউ তাড়ায়নি, পোড়ায়নি ঘর!
পদ্মা-গর্ভে বিলীন হওয়া জমি-জমা হারালেও মানুষ ঘর সরিয়ে 
নেওয়ার সুযোগ পায়। উদ্ধার করতে পারে ঘটি-বাটি, তৈজসপত্র।
কিন্তু আমি?
দড়ি খুলে নির্যাতিতা বোনের লাশটিও নামাতে পারিনি। সৎকার তো পরের কথা! 

---প্রতিবাদ?
---মুখ ফুটে কথা বলাও অপরাধ!
---আজকের দিনে এমনটাও সম্ভব?
---সর্বত্র নয়। এখানে ওখানে ঘটছে অনেক কিছুই; যা মিডিয়ার নজরে আসে না। প্রতিবেশীরা মুখ বুজে থাকে নিজেদের বিপদ আশঙ্কায়।
মিছিল-পোস্টার, দেয়াল লিখন সবই আজ অর্থহীন। যেন ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন!

রাত পাহারা

হুঁশি...য়া....র, সাব...ধা....ন...
চৌকিদারের চেনা কণ্ঠ। নিজেকে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা। চোখে ঘুমের আমেজ। মেজাজে বিরক্তি। মনে আক্ষেপ। 
বিলম্বিত ভোরের জন্য। চোরেরা ভীতু নয়। সেয়ানা অনেক। চৌকিদারকে এড়িয়ে সিঁদ কাটে। 
ফতুর করে ঘুমন্ত গেরস্তের যা কিছু দামি। কিন্তু তুফাইন্যা চৌকিদার থাকতে সে উপায় নেই।

গভীর রাতে দরজায় ঠক ঠক। জেগে ওঠে নূরজাহান। ঘুম চোখের বারান্দা ছাড়তেই সচেতন হয় সে। 
কড়া নাড়ছে কে, তুফাইন্যা? কিন্তু ও তো কাজে ফাঁকি দেওয়ার মানুষ না! 

পাহারা ছেড়ে আশনাই করতে আসবে না কিছুতেই! তাহলে কী শরীর ঠিক নেই! অসুস্থ? নিশ্চিত হতে হাঁক ছাড়ে সে---
---দরজা ধাক্কায় কেডা? 
উত্তরে থেমে যায় শব্দ। কিন্তু একটু বিরতি দিয়ে আবার শুরু হয়। এবার আরও দ্রুত। আরও জোরে।
---কী জ্বালা! বোবা-কালা নাকি? দোরগোড়ায় কেডায়? হঠাৎ নূরজাহানের মনে বিদ্যুৎ চমকায়।

কোনো লম্পট-বদমাশ নয় তো? তাই হবে। নইলে চোরের মতো চুপ কেন? ওর বর হলে সাড়া দিত।
---খাড়াও গোলামের পুত! পরের পুকুরে বড়শি ফেলার মতলব? রাখো তোমারে পুলসেরাত দেখাইতাছি! 
সে বেড়ায় গোঁজা রামদাটি হাতে নেয় হ্যাঁচকা টানে। কায়দামতো বাগিয়ে এগোয় দরজামুখো।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫