Logo
×

Follow Us

অন্যান্য

ভারতের অনিরাপদ ভবিষ্যৎ

Icon

কাজী সানজীদ

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১৬:০৯

ভারতের অনিরাপদ ভবিষ্যৎ

ভারতের সামরিক প্রতিরক্ষা ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল মনে হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতকে সম্ভবত নিরাপত্তাহীনতার কিনারে নিয়ে যাচ্ছেন! তার ধর্মান্ধ অশিক্ষিত অনুসারীরা সেটা না বুঝে বরং মোদির আত্মঘাতী সিদ্ধান্তগুলোকেই হয়তো সমর্থন করে যাবে! 

মে, ২০২৫-এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চার দিনের যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয় ভারতের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তাকে বাস্তব হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাদের সব ধরনের গর্বের অস্ত্রগুলো অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমান, রাশিয়ার এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং তাদের সহযোগিতায় তৈরি ব্রাহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র। এ তিনটিই ছিল তাদের তুরুপের তাস, যেগুলো নিয়ে তারা গর্ব করত। কিন্তু সেগুলো পাকিস্তানকে নতজানু করতে পারেনি। বরং ভারতই বেশ কিছুটা পর্যুদস্ত হয়েছে। পাকিস্তান সন্তর্পণে এসব অস্ত্রের বিরুদ্ধে চীনের সহযোগিতায় কার্যকর মোকাবিলা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা আমরা এই যুদ্ধে দেখলাম। পাকিস্তানি বিমানবাহিনী একটি সিমলেস ইন্টিগ্রেটেড হাইটেক সিস্টেমে যুদ্ধ করে ভারতীয় বিমানবাহিনীকে পর্যুদস্ত করে। শেষ দিনে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে নিখুঁত আক্রমণ চালিয়ে সব নিরাপদে ফিরে আসে। এবারের আকাশযুদ্ধে পাকিস্তান ইসরায়েলকেও পেছনে ফেলেছে। 

তবে ভারত একটি ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। আরব সাগরে মোতায়েন করা বিমানবাহী রণতরি আইএনএস বিক্রান্তকে এ যুদ্ধে টহল কাজে ব্যবহার করলেও আক্রমণে ব্যবহার করেনি। সেটি যদি করাচিতে হামলা চালাত তাহলে, পাকিস্তানি পাল্টা হামলায় ডুবে গিয়ে ভারতকে বিশাল লজ্জায় ডোবাত। কেননা পাকিস্তানের কাছে রয়েছে দূরপাল্লার অত্যাধুনিক চায়নিজ হাইপারসনিক নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, যা ভূমি বা আকাশ থেকে ছোড়া যায়। 

এখন ভারতের ডিফেন্সের ভবিষ্যৎ কী? ভারতের জন্য এখন একটি মাত্র পথ খোলা আছে। তা হলো, প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যাপকভাবে অত্যাধুনিক মার্কিন অস্ত্রসম্ভারে সজ্জিত করা। এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অ্যাওয়্যাক রাডার বিমানের সমন্বয়ে একটি ইন্টিগ্রেটেড কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

কিন্তু সেখানেও রয়েছে পর্বতসম বাধা। প্রথমত, এসব সমরাস্ত্র সংগ্রহ করতে বিশাল বাজেট দরকার, যা ভারতের পক্ষে এখন বরাদ্দ করা মুশকিল। এ ছাড়া অপদস্থ হওয়া এড়ানোর জন্য মার্কিনিরা হয়তো শর্তজুড়ে দিতে পারে, এফ-৩৫ চীন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না।

শ্রেষ্ঠতম মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের নিজের সেনাবাহিনীর বাইরে একমাত্র ইসরায়েল সফলভাবে মোতায়েন ও ব্যবহার করছে। তারা এ ক্ষেত্রে বহু যুগ ধরে সুনিপুণ দক্ষতা প্রদর্শন করে মার্কিনিদের আস্থা অর্জন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে কার্যত নিজেদের একটি অঙ্গরাজ্যের মতো মনে করে। তাই তাদের সব অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ব্যবস্থা নিজ দেশ বাদে একমাত্র ইসরায়েলেই মোতায়েন করা থাকে। ইতিহাস বলে, ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সে আস্থা নেই। ভারতের ব্যাপারে ইসরায়েলের মতো অলআউটে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই যুক্তরাষ্ট্রের।

তাহলে বাকি থাকল ফ্রান্স ও রাশিয়া। ফ্রান্সের যুদ্ধবিমান, রাডার ইত্যাদি চীনের মতো আধুনিক ও কার্যকর নয়, অথচ মূল্য অনেক বেশি। সেগুলো দিয়ে একটি কার্যকর ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেম গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এ ছাড়া তারা আর অ্যান্ড ডিতে বিনিয়োগে চীন থেকে অনেক পিছিয়ে। অন্যদিকে পাকিস্তান চীনের অত্যাধুনিক সিস্টেমগুলো নিয়মিত ভিত্তিতে পেতেই থাকবে। 

এখন ভারতের জন্য বাকি থাকল রাশিয়া। তারা কিছু অস্ত্র দেবে ঠিকই, কিন্তু মিত্র হিসেবে রাশিয়ার কাছে ভারতের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য চীন। এ ছাড়া রাশিয়ার প্রধান ভূ-রাজনীতি চীনের সঙ্গে সঠিকভাবে মিলে যায়। তাই নিজেদের শ্রেষ্ঠতম সিস্টেমগুলো তারা চীনকে অখুশি করে ভারতকে দেবে না, আগেও দেয়নি। যেমনÑরুশ এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চীন ও ভারতের ভার্সানগুলোর মধ্যে বেশ ফারাক। রাশিয়ান সেনাবাহিনী যে ভার্সানটি ব্যবহার করে, সেটিই তারা চীনকে দিয়েছে, আর কাউকে নয়। এটা প্রমাণিত, ভারত রাশিয়ার নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়, বরং পরীক্ষিত বিশ্বাসঘাতক। 

কাজেই ভবিষ্যতে পাকিস্তান উত্তরোত্তর শক্তিশালী হতেই থাকবে আর ভারত ক্রমে পিছিয়ে পড়বে মূলত তাদের ভুলনীতির কারণে। স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্রগুলো দিয়ে ধর্মান্ধ অনুসারীদের বুঝ দেওয়া যাবে; তবে যুদ্ধক্ষেত্রে সেগুলো খুব একটা কাজে আসবে না।

চাণক্য অনুসারীরা সবচেয়ে সহজ রাস্তাটি হয়তো কোনো দিনই মাড়াবে না! সেটি হলো, প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করা।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫