সাইবার হামলার হুমকি
২৯ গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোয় নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৩, ২২:০৭

প্রতীকী ছবি।
সাইবার আক্রমণ থেকে স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সুরক্ষার ২৯টি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই) প্রতিষ্ঠানে গঠন করা হবে সাইবার সিকিউরিটি ডিজাইন ল্যাব।
আগামী মাসে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও সাইবার নিরপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবে আইসিটি বিভাগের কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সার্ট) ।
আজ বুধবার (৯ আগস্ট) সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই) প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নেতৃত্বে আইসিটি বিভাগের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
এসময় পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে বিদ্যমান ব্যাকডোরের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য চুরির ঝুঁকি তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য সাইবার নিরাপত্তা ইস্যু তৈরি হচ্ছে জানিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
সভায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোগুলোর বিভিন্ন সাইবার নিরাপত্তা ইস্যু, আইসিটি জনবল কাঠামো উন্নয়ন, আইসিটি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, নিয়মিত আইটি অডিট পরিচালনা, সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার (এসওসি) ও নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার (এনওসি) গঠন নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়া ডেটার ভলিউম, গুরুত্ব ও ডেটা সিকিউরিটি বিবেচনা করে আরও পাঁচটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের বলেন, সাইবার আক্রমণ ঠেকাতে এবং তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সতর্ক থাকা উচিত।
এসময় তিনি বিআরটিএ, সুরক্ষা, ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থাপনা ও পল্লী বিদ্যুৎসহ নতুন পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের কথাও জানান।
নতুন এই পাঁচটিসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর সংখ্যা হবে ৩৪টি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও কোম্পানিতে বড় ধরনের সাইবার হামলার হুমকি পেয়ে গত ৪ আগস্ট সতর্কতা জারি করে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।
কিছু ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ হ্যাকার গ্রুপ আগামী ১৫ আগস্ট এই হামলার চালানোর হুমকি দিয়েছে বলে জানায় বিজিডি ই-গভ সার্ট ।
ওই সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, হুমকিদাতারা নিজেদেরকে ‘হ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ’ নামে পরিচয় দিয়েছে। গ্রুপগুলো গত ৩১ জুলাই ঘোষণা দেয় যে, আগামী ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাইবার জগতে তারা হামলার ঝড় বইয়ে দেবে।
তাই সাবধানতা হিসেবে দেশের সিআইআই, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ প্রস্ততকারী, শিল্প কারখানা, বিদ্যুৎ ও শিক্ষা, পরিকাঠামো এবং সব ধরনের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানিগুলোকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয় ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম।
হ্যাকটিভিস্ট গ্রুপের ‘ছোট থেকে মাঝারি’ আকারের সাইবার-আক্রমণ প্রতিরোধ করা এবং অবকাঠামো রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও নির্দেশ দেয়া হয়।
বিজিডি ই-গভ সার্টের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, সম্প্রতি একই মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ বেশ কয়েকটি হ্যাকার দলকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা ক্রমাগত বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে সাইবার-আক্রমণ চালাচ্ছে।
এর আগে হ্যাকার গ্রুপ বাংলাদেশে পেমেন্ট গেটওয়ে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং ব্যাংক খাতে সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে বলে সার্টের পক্ষ থেকে বলা হয়।
আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিজিডি ই-গভ সার্টের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান, ডিজিটাল নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষে মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বিআরটিএ, বিদ্যুতসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।