
ছবি: ডয়চে ভেলে
চলছে তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবের যুগ। আর মানুষ ঘরে বসেই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন। ইউটিউব জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য আয়ের উৎস। ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করলে যে ভিউ হয়, এবং মনিটাইজড চ্যানেলে যে বিজ্ঞাপন হয়, তা থেকে কেউ কেউ লাখ টাকাও আয় করছেন।
জার্মানির এক ইউটিউবার তাঁর জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ও বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়ে ভালই আয় করছেন৷ আলেক্সিবেক্সি জার্মানির এক ইউটিউব তারকা, যাঁর আসল নাম আলেক্সান্ডার ব্যোম৷ বিখ্যাত মানুষদের নিয়ে কৌতুক, জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে সাক্ষাৎকারসহ আরো কত কী যে করেন তিনি!
এবার তিনি এক ইলেকট্রনিক দোকানের ইউটিউব চ্যানেলের হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন৷ ব্যোম-এর জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে সেই কোম্পানি পণ্য বিক্রি করতে চায়৷ ব্যোম নিজে প্রায় ১০ বছর ধরে ইউটিউব থেকে আয় করে চলেছেন৷ তিনি বলেন, "ইউটিউবার হওয়া আসলে কোনো বড় ব্যাপার নয়৷ তবে এই প্ল্যাটফর্মে প্রচলিত বাধাগুলি না থাকায় সুবিধা হয়৷ যেমন কোনো সম্পাদক বা টিভি কোম্পানির সম্মতি লাগে না৷ নিজের মর্জিমাফিক ভিডিও প্রকাশ করা যায়৷ আমাদের প্রজন্ম শুরু থেকেই এই স্বাধীনতায় অভ্যস্ত বলে মনে হয়৷ যা বলার, ইচ্ছামতো আমরা তা প্রকাশ করতে চাই৷"
"একজন ইউটিউবারকে দেখতে ভালো হতে হবে এবং তার নিজস্বতা থাকতে হবে৷ এটাই তাঁদের মূলধন৷ তারা কিছু পরিবেশন করলে ইউজাররা তাদের কথা বিশ্বাস করবে৷ এমন কনটেন্ট বা ভিডিও ভালোভাবে প্রচার করে তাঁর মাধ্যমে আয় করাই কি স্বাভাবিক নয়? আলেক্সান্ডার ব্যোম মনে করেন, "অনেকেই সেটা করে৷ আমি এমনটা করি না৷ আমি নিজের আগ্রহকে গুরুত্ব দেই৷ কেউ বিজ্ঞাপন নিয়ে এগিয়ে এলে আমি তাকে উৎসাহ দেই৷ তা সত্ত্বেও আমি মজার, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে ভালবাসি, ছোট ফিল্ম বানাই৷ তাতে সাফল্য এলে ভালো, না এলেও কিছু এসে যায় না৷"
ফল্কসভাগেনের মতো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের জন্যও ব্যোম কাজ করেছেন৷ গত কয়েক বছরে অনেক বড় কোম্পানি জার্মানির ইউটিউবারদের উপর কোটি কোটি ইউরো বিনিয়োগ করেছে৷
কিন্তু ইউটিউবে বিপণনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করেন, এই অঙ্ক বড়ই বেশি৷ যেমন ডেডেরিশস রাইনএকে অ্যান্ড পার্টনার্স কোম্পানির ইয়ুলিয়া হিনৎসে৷ তিনি বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতির কারণে ইউটিউবার-মার্কেটিং-এর ব্যবহার কিছুটা কমে যাবে, কারণ বিভিন্ন কোম্পানি ও ইনফ্লুয়েন্সর তাদের খাঁটিত্ব হারাতে চায় না৷ অর্থাৎ প্রত্যেক ইউটিউব ভিডিওর মধ্যে লুকানো বিজ্ঞাপন থাকবে না৷ বিজ্ঞাপনের সংখ্যা কমে যাবে৷ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে একান্ত সহযোগিতা চুক্তি করা হবে৷''
ইউটিউব আসলে তরুণ প্রজন্মের কাছে আকর্ষণীয়৷ ৩০ বছর বয়সি হিসেবে সময় কি তাঁর ফুরিয়ে আসছে? এ বিষয়ে আলেক্সান্ডার ব্যোম নিজে মনে করেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে আমিও এমনটা ভেবেছি৷ দুই বছর আগে আমাকে প্রশ্ন করলে আমি বলতাম, কোনোভাবে তরুণ থাকার চেষ্টা করতে হবে৷ কিন্তু এর মধ্যে সবারই বয়স বাড়ছে৷ মানিয়ে নেবার চেষ্টা যত কম করা যায়, ততই ভালো৷''
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ব্যোম প্রতি এক লাখ ক্লিকের জন্য আড়াইশো মার্কিন ডলার আয় করেন৷ ফলে মাসে আনুমানিক প্রায় ১০ হাজার ডলার আয় হয়৷ সেইসঙ্গে বিজ্ঞাপন বাবদ অর্থ তো রয়েছেই৷ ফলে তাঁর ভালোভাবেই দিন চলে যায়৷