
জীবন হয়ে উঠেছে ডিভাইসনির্ভর। ছবি: সংগৃহীত
আমাদের জীবন হয়ে উঠেছে ডিভাইসনির্ভর। কিন্তু এসব ডিভাইসের নীল আলো আমাদের চোখের ক্ষতি করছে। এই ক্ষতি থেকে চোখের সুরক্ষায় কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে।
আমাদের জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। নিত্যদিনের জীবনে প্রতিনিয়ত স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করতে হয়। কখনো নিজের কাজে, কখনো অফিসের কাজে এসব ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়। এর বাইরে বিনোদন, খেলাধুলা, অবসর কাটানোর জন্যও আমরা এসব ডিভাইসের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছি। কিন্তু আমরা ভুলে যাচ্ছি চোখের কথা। এসব ডিভাইসের নীল আলো আমাদের চোখের বড় ধরনের ক্ষতি করছে। তাই স্মার্ট ডিভাইসের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখের সুরক্ষার কথা ভাবতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা।
টানা তাকিয়ে থাকা নয়
অনেকেই কাজ করতে করতে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের দিকে একটানা তাকিয়ে থাকেন। আবার অনেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে মোবাইলে গেমস খেলেন, ভিডিও দেখেন। এতে চোখের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। তাই এভাবে টাকা ডিভাইসে পড়ে থাকা উচিত নয়। মাঝে মাঝে বিরতি নিতে হবে। চোখের পাতা ফেলতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় ডিভাইস ব্যবহারের সময় আধঘণ্টা পরপর একটি বিরতি নেওয়া। ওই সময়ে অন্তত ২০ বার করে চোখের পাতা ফেলতে হবে। কিংবা টানা কিছুক্ষণ প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। আবার কিছু সময় জন্য চোখ বন্ধ রাখতে পারেন। তাতেও চোখ আরাম পাবে।
ডার্ক মোড ব্যবহার
অনেকে ডিভাইসে উজ্জ্বল আলো ব্যবহার করেন। তা সে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ বা স্মার্টফোন হোক। কিন্তু ডিভাইসের উজ্জ্বল আলো চোখের ক্ষতির বড় কারণ হতে পারে। বিশেষ করে চারদিকে অন্ধকার থাকলে চোখে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ল্যাপটপ, ডেস্কটপ ও স্মার্টফোনের ডার্ক মোড বা রিডিং মোড ব্যবহার করতে পারেন। ডিভাইসের সেটিংস অপশনে ডার্ক মোড থাকে। ডার্ক মোড বা রিডিং মোড নীল আলোর ক্ষতিকর মাত্রা কমায়। এতে চোখে চাপ পড়ে কম।
পর্দার আলো সমন্বয়
ডিভাইস ব্যবহারের সময় পর্দার আলো সমন্বয় করে নিতে হবে। খুব বেশি আলো যেমন চোখের ক্ষতি করে, আবার খুব কম ব্রাইটনেসও চোখের জন্য ক্ষতিকর। পর্দার আলো সমন্বয় করতে ডিভাইসের সেটিংস অপশনে অ্যাডজাস্ট করে নিতে হবে। বারবার সেটিংস পরিবর্তন করতে না চাইলে অটোমেশন অপশন বেছে নিতে পারেন। তাহলে এটি চারপাশের আলোর মাত্রা অনুযায়ী অটোমেটিক আলো ঠিক করে নেবে। বিশেষ করে স্মার্টফোন।
ওয়েলবিয়িং ফিচার
এখন সব স্মার্টফোনে ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং ফিচার থাকে। এ ফিচারটির মাধ্যমে স্ক্রিন টাইম কমানো সম্ভব। এই ফিচারটি টানা মোবাইল ব্যবহারের রাশ টানতে কার্যকর উপায় হতে পারে। তাই স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা চোখের সুরক্ষায় ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং ফিচারের মতো আইফোনে আছে স্ক্রিন টাইম অপশন। ফোনের সেটিংস থেকে এ ফিচারটির সুবিধা নেওয়া যাবে।
লেখার আকার হোক বড়
আমরা যেসব ডিভাইস ব্যবহার করি সেগুলোতে বড় আকারের ফন্ট ব্যবহারের সুযোগ আছে। তবুও অনেকে ছোট আকারের ফন্ট ব্যবহার করেন। ছোট আকারের লেখা দেখতে গেলে চোখের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এতে চোখের ক্ষতি হয়। অথচ চাইলেই আমরা ফন্টের আকার বাড়িয়ে নিতে পারি। তাহলে চোখের জন্য আরামদায়ক হবে। চোখও একটু স্বস্তি পাবে। ডিভাইসের ডিসপ্লে বা পারসোনালাইজেশন অপশনে ঢুকে লেখার আকার নিজের ইচ্ছেমতো বড় করে নেওয়া যায়।
মেনে চলুন ২০-২০-২০
আমরা বলছি, ডিজিটাল ডিভাইস চোখের ক্ষতি করছে। কিন্তু ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করার উপায় নেই। কারণ আমাদের কাজগুলো এখন ডিভাইসনির্ভরশীল। অবসর কাটাতেও এই ডিভাইসই আমাদের ভরসা। তাহলে উপায়? সহজ একটি উপায় হলো ২০-২০-২০ নিয়ম মেনে চলা। মানে প্রতি ২০ মিনিট পর একবার স্ক্রিন থেকে চোখ সরাতে হবে। তারপর অন্তত ২০ ফুট দূরে থাকা কোনো জিনিসের দিকে তাকাতে হবে। সেদিকে অন্তত ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকতে হবে। তাহলে চোখ বিশ্রাম পাবে। আর এই নিয়মকে বলা হচ্ছে ২০-২০-২০।