
প্রতীকী ছবি
ভুল বা মিথ্যা তথ্য খুব দ্রুত ছড়ায়। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ভুল তথ্য পোস্ট করা হলে মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। কীভাবে এসব ভুল তথ্য যাচাই করবেন তা তুলে ধরা হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে ১০০ তথ্যের মধ্যে প্রায় ৪০টি তথ্য ভুলে ভরা থাকে। এ বিষয়ে ইউএস ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের প্রেসিডেন্ট মার্সিয়া ম্যাকনাট মনে করেন, সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছিল করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে। তিনি জানান, মহামারি চলাকালে ইউটিউবে টিকা নিয়ে যেসব ভিডিও ছাড়া হয়েছে, তার তিনটির মধ্যে দুটিতেই ভুল তথ্য থাকত।
ডিজিটাল লিটারেসি বিশেষজ্ঞ আমান্ডা রুগেরি সামাজিক মাধ্যমে ভুল ও মিথ্যা তথ্য চিহ্নিত করার পদ্ধতি বলে দিয়েছেন। তার দেওয়া পদ্ধতিতে চারটি উপায়ে এসব তথ্য যাচাই করতে হবে।
এস-স্টপ
আমাদের সবার হাতে এখন স্মার্টফোন। সবাই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুবই সক্রিয় থাকি। আর বর্তমানে বিশ্বের নানা প্রান্তের বিভিন্ন তথ্য জানতে মানুষ এসব সামাজিক মাধ্যমে ঢু মারে। ফলে অনেক তথ্য সামনে চলে আসে। কিন্তু সেই তথ্য ভুল নাকি সঠিক তা যাচাই না করে সবাই শেয়ার করে। এভাবে একটি তথ্য মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। সেই তথ্য ভুল হলে কাউকে না কাউকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। কখনো কখনো দীর্ঘদিনের সুনাম নষ্ট হয় ওই একটি ভুল তথ্যের কারণে। তাই যেকোনো তথ্য সামনে এলে তা শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যাকে প্রযুক্তির ভাষায় বলা হচ্ছে এস-স্টপ। বরং আগে যাচাই-বাছাই করতে হবে, তারপর শেয়ার।
আই-ইনভেস্টিগেট সোর্স
সামাজিকমাধ্যম স্ক্রল করতে শুরু করলে একের পর এক নানান পোস্ট সামনে আসে। আবার তালিকায় থাকা কোনো বন্ধু কিছু শেয়ার করলেও সেই পোস্ট সামনে আসে। তবে সব তথ্যকে বিশ্বাস করা উচিত হবে না। কোনো তারকাও যদি কিছু শেয়ার করে থাকেন, সেই তথ্যকেও বিশ্বাস করা ঠিক নয়। তাহলে উপায়? উপায় হলো কোনো তথ্য সামনে এলে সেই পোস্টের পটভূমি জানতে হবে। প্রয়োজনে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও বিশ্বাসযোগ্য ওয়েবসাইটে গিয়ে ঘটনা খুঁজে বের করতে হবে। সেখানে পাওয়া গেলে সহজে যাচাই করা যাবে। আর না পাওয়া গেলে ওই তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকাই ভালো। এ ক্ষেত্রে উইকিপিডিয়াকেও পুরোপুরি বিশ্বাস করা যাবে না। কারণ উইকিপিডিয়ায়ও ভুল তথ্য থাকে, তাই শতভাগ বিশ্বাস করা যাবে না।
এফ-ফাইন্ড বেটার কভারেজ
একটি তথ্য আপনি সংবাদমাধ্যমে খুঁজেও পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেন না। কোথাও না কোথাও একটু সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ফ্যাক্ট চেকারের সাহায্য নিতে হবে। গুগলের নিজস্ব ফ্যাক্ট চেকিং সিস্টেম আছে। তবে বাংলা ভাষার বেশির ভাগ তথ্য বা খবর শতভাগ ফ্যাক্ট চেক করতে পারে না গুগল। অবশ্য গুগল নিউজ এসব ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে poynter নির্ভরযোগ্য একটি মাধ্যম। খবরে ব্যবহার করা ছবি অনলাইনে কোথায় কোথায় আছে, সেসব জানতে ব্যবহার করা যেতে পারে TinEye, Yandex।
টি-ট্রেস করতে হবে অরিজিনাল কনটেক্সট
এই ধাপে তথ্যের উৎস যাচাই করতে হবে। কিছু কিছু খবরের জন্য সংবাদপত্র ও টেলিভিশন নিজেদের রিপোর্টে অন্য উৎস থেকে পাওয়া তথ্য ও ছবি ব্যবহার করে। সে ক্ষেত্রে সেই উৎস সঠিক ও কতটা গ্রহণযোগ্য আগে তা যাচাই করতে হবে। এ জন্য বেশির ভাগ বিশ্বাসযোগ্য মিডিয়া উৎসের ঠিকানা দিয়ে দেয়, যেন পাঠক বা দর্শক বিভ্রান্ত না হয়। তবে সমস্যা হলো ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নিয়ে। তারা ভিডিওতে এমন অনেক তথ্য ব্যবহার করে, যেগুলোর কোনো বিশ্বাসযোগ্য উৎস থাকে না। তাই এসব ভিডিও শেয়ার করা থেকে বিরত থাকাই ভালো।