শিশু-কিশোরদের ভিডিও গেমের আসক্তি ঠেকাতে চীনে নতুন আইন

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৯

১৮ বছরের কম বয়সীরা সপ্তাহে তিন ঘণ্টার বেশি ভিডিও গেম খেলতে পারবে না। প্রতীকী ছবি
অপ্রাপ্তবয়স্করা কতক্ষণ ভিডিও গেম খেলতে পারবে সম্প্রতি সে সংক্রান্ত একটি নতুন আইন চালু করেছে চীন। সেটি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তার একটি রূপরেখাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চীনে তরুণদের মধ্যে ক্রমশ ভিডিও গেমে সময় কাটানোর প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে এটি রীতিমতো আসক্তিকে পরিণত হচ্ছে, যা নিয়ে চিন্তিত কর্তৃপক্ষ। তাদের জন্য এমনকি ক্লিনিকও খুলেছে সরকার, যেখানে নানা থেরাপি দিয়ে আসক্তদের ভিডিও গেম থেকে দূরে রাখার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারছে না সরকার। এবার আইন করে ভিডিও গেম খেলার নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
গত সোমবার (৩০ আগস্ট) থেকে চালু হওয়া নতুন এই আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সীরা সপ্তাহে তিন ঘণ্টার বেশি ভিডিও গেম খেলতে পারবে না। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ন্যাশনাল প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনপিপিএ) বলছে, আইনটি করা হয়েছে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীনের ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শিশু-কিশোর অনলাইনে গেম খেলে। কর্মদিবসে ১৩ শতাংশের বেশি শিশু দৈনিক দুই ঘণ্টারও বেশি সময় মোবাইল গেমে যুক্ত থাকে।
শিশু-কিশোরদের ভিডিও গেমে আসক্তি কমানোর এমন আইনী উদ্যোগ এবারই প্রথম নয়। ২০১৯ সালেও এমন একটি আইন পাস করা হয়েছিল। তাতে কর্মদিবসে দেড় ঘণ্টার ও ছুটির দিনে তিন ঘণ্টার কম সময় গেম খেলার জন্য বেঁধে দেয়া হয়। রাত ১০টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত গেমিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের এই সংক্রান্ত মাসিক ব্যয় বয়সভেদে ২৮ থেকে ৫৭ ডলারের মধ্যে সীমিত করে দেয়া হয়।
অনলাইনে ভিডিও গেম খেলার ক্ষেত্রে অপ্রাপ্তবয়স্কদের প্রকৃত নাম পরিচয়, এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দেয়ারও বাধ্যবাধকতা আছে চীনে। টেনসেন্ট ও নেটইজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সিস্টেমও সেভাবেই তৈরি করেছে। অপ্রাপ্তবয়স্করা যাতে রাতে মা-বাবার পরিচয় ব্যবহার করে লগইন করতে না পারে সেজন্য গত জুলাইতে টেনসেন্ট চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তিও চালু করে।
নতুন আইন অনুযায়ী, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ বছরের কম বয়েসিরা সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনলাইনে গেম খেলতে পারবে না। শুধু শুক্র, শনি ও রবিবার এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে এক ঘণ্টা করে খেলার সুযোগ পাবে। এই নিয়মের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অনলাইন গেমিং কোম্পানিগুলোকে তাদের সিস্টেম তৈরি করতে হবে। ব্যবহারকারীরা যেন যথাযথ পরিচয় দিয়ে লগইন করে সেটিও তাদের নিশ্চিত করতে হবে।
এই নিয়ম ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে নজরদারি বাড়াবে বলে জানিয়েছে এনপিপিএ। কোনো কোম্পানি আইন ভঙ্গ করলে তদন্ত করে তাদের কড়া শাস্তি দেয়া হবে বলেও জানিয়েছে তারা। বিধিনিষেধ এড়াতে শিশুরা যাতে বড়দের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও স্কুলগুলোকেও নজরদারি বাড়াতে বলেছে কর্তৃপক্ষ। -ডয়চে ভেলে