মহাকাশে নাসার শক্তিশালী টেলিস্কোপের যাত্রা শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:৫৯

ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ‘জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ’ মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও আধুনিক স্পেস টেলিস্কোপ (মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র)।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ১০ বিলিয়ন ডলারের জেমস ওয়েব নামের স্পেস টেলিস্কোপটি ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে ইউরোপিয়ান আরিয়ান রকেটে উৎক্ষেপণ করা হয়। বাংলাদেশ সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ঐতিহাসিক এই অভিযানটি শুরু হয়।
এই ব্যয়বহুল প্রকল্পে নাসার সাথে যুক্ত হয়েছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) ও কানাডার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
স্পেস টেলিস্কোপটির নকশা ও নির্মাণে প্রায় ৩০ বছর লেগেছে। এই টেলিস্কোপকে একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মূল দুটি বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য হলো ছায়াপথের জন্ম ও বিবর্তন এবং নক্ষত্র ও গ্রহের সৃষ্টি কীভাবে হলো, তা খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করা।
এ ছাড়াও দূরবর্তী গ্রহের বায়ুমণ্ডলও পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে এই টেলিস্কোপ। ফলে অন্য গ্রহে প্রাণের সন্ধান এবং সেই গ্রহ মানব বসবাসের উপযোগী কি না, তাও জানা যাবে।
মহাকাশ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণার দ্বারও উন্মোচন করবে জেমস ওয়েব। এর সাহায্যে পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে মহাবিশ্বে বিরাজমান বস্তু ও সংঘটিত ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
যেমন- এর দ্বারা ধারণকৃত অবলোহিত বিকিরণ (ইনফ্রারেড রে) চিত্রণের মাধ্যমে আজ থেকে এক হাজার ৩৫০ কোটি বছরেরও আগে মহাবিশ্বের প্রথম আদি নক্ষত্রগুলো কীভাবে রূপ লাভ করেছিল তা জানা যাবে।
টেলিস্কোপটিতে রয়েছে ১৮টি আলোর প্রতিফলন করতে সক্ষম দর্পণখণ্ড। যেগুলো সোনা দিয়ে নির্মিত বেরিলিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি। সব কটি মিলে ৬.৫ মিটার ব্যাসের একটি বিশাল দর্পণ তৈরি করবে এটি। যেখানে এর আগের হাবল টেলিস্কোপের দর্পণের ব্যাস ২.৪ মিটার।
এই টেলিস্কোপের বিষয়ে প্রত্যাশা খুবই উচ্চ, তাই উৎকণ্ঠাও বেশি।
সঠিকভাবে উৎক্ষেপিত হতে হলে উৎক্ষেপণের পর প্রথম ২৭ মিনিট একে টিকে থাকতে হবে।
এরপর টানা ৩০ দিন মহাকাশ ভ্রমণ শেষ করে পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথ লাগ্রেজিয়ান পয়েন্টে অবস্থান করবে। যেখানে হাবল টেলিস্কোপ পৃথিবী থেকে মাত্র ৫৪৭ কিলোমিটার দূরে।
ইউএস স্পেস এজেন্সির প্রশাসক বিল নেলসন এই ঘটনাকে একটি অসাধারণ অভিযান হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমরা যদি বড় স্বপ্ন দেখি, তাহলে কত বড় কাজ করতে পারি।’
টেলিস্কোপটির নাম রাখা হয়েছে চন্দ্রাভিযান অ্যাপোলোর দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জেমস ওয়েবের নামানুসারে।
১৯৯০ সালে উৎক্ষেপিত টেলিস্কোপ হাবলের উত্তরসূরি হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবে জেমস ওয়েব। প্রায় ৩১ বছর কার্যক্রম চালানোর পর হাবল টেলিস্কোপের অবসরের সময় ঘনিয়ে এসেছে। হাবল টেলিস্কোপ ছিল মহাকাশে ভাসমান প্রথম কোনো টেলিস্কোপ।