এবার হাতের ইশারাকে লেখায় রূপান্তর করার প্রযুক্তি

মিরাজুল ইসলাম
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১৫:১৬

ছবি: সংগৃহীত
ক্যামেরার সামনে আপনি আঙুলের সাহায্যে সাংকেতিক ভাষায় কোনো সংকেত দেখালেন, সাথে সাথে কম্পিউটারের স্ক্রিণে লেখা উঠল যা আপনি বোঝাতে চেয়েছেন সংকেতের মাধ্যমে। কেমন হতো বিষয়টি?
আসলে পৃথিবীর অনেক সাংকেতিক ভাষার মধ্যে অন্যতম হাত আর আঙুলের ইশারার সাহায্যে প্রকাশ করা ভাষা। এর ব্যাপক ব্যবহার থাকার পরও এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রযুক্তি বা সফটওয়্যার আবিষ্কার হয়নি যা এই সাংকেতিক ভাষাকে লেখায় রূপান্তর করতে পারবে।
সম্প্রতি ঠিক এমনই ধারণা সামনে নিয়ে এসেছেন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া শিক্ষার্থী।
ভারতের ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়াঞ্জলি গুপ্ত এমন একটি অসাধারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মডেল তৈরি করেছেন যা আমেরিকান সাংকেতিক ভাষাকে ইংরেজি ভাষায় রূপান্তরিত করতে সক্ষম। ডেটা সায়েন্টিস্ট নিকোলাস রেনোটের ‘রিয়েল-টাইম সাংকেতিক ভাষা শনাক্তকরণ’ ভিডিও থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই এআই মডেলটি তৈরি করেছেন প্রিয়াঞ্জলি। তার তৈরি এআই মডেলটি একটি পূর্ব প্রশিক্ষিত মডেলের মাধ্যমে হাতের ইশারার সাংকেতিক ভাষাকে ইংরেজিতে অনুবাদ করতে সক্ষম।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রিয়াঞ্জলি বলেন, এক্ষেত্রে ব্যবহৃত ডেটাসেটটি একটি কম্পিউটার ওয়েবক্যাম এবং নির্ধারিত অ্যানোটেশনের (টিকা) সাহায্যে ম্যানুয়ালি তৈরি করা হয়েছে। আপাতত মডেলটি একটি একক প্রশিক্ষিত ফ্রেমে কাজ করবে। ভিডিও শনাক্ত করার জন্য মডেলটিকে একাধিক ফ্রেমে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সেজন্য কাজ চলছে। এ কাজের জন্য লং শর্ট-টার্ম মেমোরি (এলএসটিএম) নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার ইচ্ছে আছে।
এই তরুণী মনে করেন, সাংকেতিক ভাষা শনাক্ত করবে এমন ডিপ লার্নিং মডেল তৈরি বেশ চ্যালেঞ্জিং। এক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ওপেন-সোর্স কমিউনিটি তাকে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবেন এমনটা আশা করেন তিনি।
সাংকেতিক ভাষা নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে কিন্তু প্রিয়াঞ্জলিই প্রথম নন। এর আগে, ২০০৬ সালে আমেরিকার ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী ‘সাইন অ্যালাউড’ নামের একজোড়া হাতমোজা আবিষ্কার করেছিলেন যা সাংকেতিক ভাষাকে টেক্সট (লিখিত ভাষা) বা স্পিচে (মৌখিক ভাষা) রূপান্তর করতে সক্ষম ছিল।
থমাস প্রেয়র ও নাভিদ আযোদি নামের এই দুই শিক্ষার্থী তাদের আবিষ্কারের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে বেশ প্রশংসিতও হয়েছিলেন। নিজেদের কাজের জন্য তারা লেমেলসন-এমআইটি প্রতিযোগিতাও জিতেছিলেন।