অ্যাপল ডিভাইস হাতের নাগালে আনতে নয়া পরিকল্পনা

ইসমাইল হোসেন
প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২২, ১৩:৫৫

প্রতীকী ছবি
বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্মার্টফোন বাজার যুক্তরাষ্ট্র। আর এ বাজারের প্রায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রয়েছে অ্যাপল। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন বাজারের ৫৭ শতাংশ অ্যাপলের দখলে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্যামসাংয়ের দখলে মাত্র ২৮ শতাংশ। কিন্তু ব্যতিক্রমী ব্র্যান্ডিং আর নানামুখি পদক্ষেপে অ্যাপলের পথের কাটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কোরিয়ান ব্র্যান্ড স্যামসাং।
এই আধিপত্যের যুদ্ধে স্যামসাংয়ের বাজারের ভাগ বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। এ জন্য আরো বেশিসংখ্যক আইফোন বিক্রি করতে আইফোনের ব্যয়বহুল তকমা ভাংতে চাই। কেননা দেখা গেছে অ্যাপলের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে দাম একটি বড় কারণ, তাই অনেকেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে বাধ্য হন। অ্যাপল এই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে একটি উপায় খুঁজে পেয়েছে।
সম্প্রতি ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হার্ডওয়্যার সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আইফোন ও আইপ্যাড বিক্রি শুরু করতে পারে অ্যাপল। এতে বলা হয়, এটা মাসিক ফির মাধ্যমে ডিভাইসের মালিকানা দেওয়া হবে। অনেক দিন ধরেই অ্যাপল সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক পরিষেবার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে ব্যাপক সফলতা দেখছে। গত বছর অ্যাপল বিভিন্ন সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস থেকে কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ৭ হাজার ২২০ কোটি ডলার।
অ্যাপল এমন একটি ইকোসিস্টেম তৈরিতে সক্ষম হয়েছে, যেখানে কোনো গ্রাহক একবার প্রবেশ করলে অন্য স্মার্টফোন ব্র্যান্ডে যেতে চান না। বিকল্প ইকোসিস্টেম তৈরিতে কেউই তার ধারে কাছে নেই, স্যামসাং তো নয়-ই। যেসব গ্রাহক দামের কারণে আইফোন কিনতে পারছেন না, এবার তাদের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার কুপারটিনোভিত্তিক যুক্তি জায়ান্টটি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করা বিদ্যমান আইফোন আপগ্রেড প্রোগ্রাম থেকে নতুন হার্ডওয়্যার সাবস্ক্রিপশন পদ্ধতি ভিন্ন হবে। এ পদ্ধতি অনুসারে গ্রাহকদের একটি আইফোন ও অ্যাপল কেয়ারের জন্য ২৪ মাস মেয়াদে অর্থ দিতে হবে। এতে ১২ মাসের পেমেন্ট শেষে নতুন আইফোনে আপগ্রেডের সুযোগ মিলবে। এ সাবস্ক্রিপশন গ্রাহকদের অ্যাপল আইডি অ্যাকাউন্টের সাথে যুক্ত থাকবে। তারা অ্যাপল ওয়ানের অ্যাপল কেয়ার বান্ডল কিনতে পারবেন। সম্মিলিত সাবস্ক্রিশন; যা অ্যাপল মিউজিক, টিভি প্লাস, নিউজ প্লাস ইত্যাদির মতো পরিষেবার জন্য একত্রে মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।
হার্ডওয়্যার সাবস্ক্রিপশনের পুরো প্রক্রিয়াটা কীভাবে সম্পন্ন হবে এ নিয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যাচ্ছে না। শিগিগরিই প্রযুক্তি জায়ান্টটি তা খোলাসা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্যামসাংয়ের আগ্রাসী সম্প্রসারণ পরিকল্পনা অনেকটা ধাক্কা খাবে তা স্পষ্ট। কারণ অ্যাপল তার বাজার অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি নতুন গ্রাহক শ্রেণী তৈরির নিত্যনতুন প্যাকেজ নিয়ে আসছে। অন্তত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নিকট ভবিষ্যতে অ্যাপলের সাথে টেক্কা দেয়া বেশ দুরূহই মনে হচ্ছে।