যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথম একটি স্বয়ংচালিত গাড়ি রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। যাতে কোনো স্টিয়ারিং হুইল নেই, ব্রেক কষার পেডাল নেই, এমনকি কোনো সাইডভিউ মিররও নেই।

তবে এটির পেছনে একটি ক্যামেরা থাকবে, যাতে গাড়ির পেছনের রাস্তার ওপর সর্বক্ষণ নজর রাখা যায়।

নিউরো নামের একটি কোম্পানি এই গাড়িটি তৈরি করেছে মূলত একটি ডেলিভারি ভ্যান হিসেবে। গাড়িটির নাম দেয়া হয়েছে আর-টু। এটি টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনে পরীক্ষা করা হবে।

এই প্রথম কোনো চালকবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামছে, যেটিতে মানুষের বসার বা চালানোর কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি।

এপর্যন্ত যত চালকবিহীন গাড়ি তৈরি করা হয়েছে তার সবকটিতেই এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে দরকার হলে একজন চালক গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। আর-টু সেদিক থেকে ব্যতিক্রম।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন মন্ত্রী এলেইন চাও বলেছেন, যেহেতু গাড়িটির সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় মাত্র ২৫ মাইল, তাই এধরনের নিয়ম এই গাড়িটির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার কোনো মানে হয় না।

কিন্তু ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্ট বলেছে, এটি যখন রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে, তখন এর ওপর অনেক বেশি নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে। এই আর-টু কখন কোথায় পরীক্ষা করা হচ্ছে তা সেখানকার লোকজনকে জানাতে হবে।

নিউরোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডেভ ফারগুসন একটি ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, চালকবিহীন গাড়ির ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। গাড়ি চলাচলের বিদ্যমান নিয়মকানুনের অবশ্যই আধুনিকায়ন দরকার, কারণ কোনো চালক বা আরোহী ছাড়া একটি গাড়ি রাস্তায় চলবে, এটা কখনো আমাদের কল্পনাতেই ছিল না। কাজেই স্বয়ংচালিত গাড়ির প্রযুক্তি নিয়ে যাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো যায়, যাতে এগুলো নিরাপদে ব্যবহার করা যায়, সেজন্যে এই শিল্পের সবার কাজ করা উচিৎ।

জেনারেল মোটরস একই ধরনের একটি স্বয়ং-চালিত গাড়ি তৈরি করছে। তারাও তাদের গাড়িটির পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়েছে।

নিউরোর গাড়িটির আকৃতি ডিমের মতো, যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ গাড়ির চেয়ে এটির আকার ছোট। এটিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত দুটি কম্পার্টমেন্ট আছে, যাতে মালামাল রাখা যাবে। দরোজাগুলো খুলবে উপরের দিকে। যখন এটি কারও বাড়িতে মালামাল ডেলিভারি দিতে যাবে, তখন প্রাপককে একটি কোড দিয়ে দরজা খুলতে হবে। আর-টু রাস্তায় চলাচলের জন্য রাডার, থার্মাল ইমেজিং এবং ৩৬০-ডিগ্রি ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে।

নিউরো এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে যে হিউস্টনে যখন পরীক্ষামূলকভাবে আর-টু চালানো হবে, তখন এটি ডোমিনো'স পিৎজার পিৎজা থেকে শুরু করে সুপারমার্কেট চেন ক্রুগার বা ওয়ালমার্টের মালামাল ডেলিভারি দেবে।

নিউরো নামের কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছেন গুগলের দুজন সাবেক প্রকৌশলী। জাপানি প্রতিষ্ঠান 'সফটব্যাংক' এটিতে বিনিয়োগ করেছে। -বিবিসি