আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে ব্যবস্থা: এনবিআর চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ২০:২৯

ফাইল ছবি
আয়কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন নিয়ে যারা রিটার্ন জমা দিচ্ছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান।
যেসব করদাতা রিটার্ন দাখিল করেননি, তারা নোটিশ পাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেছেন, “তাদেরকে যথাযথ কর পরিশোধ করতে হবে।”
রবিবার ঢাকার বনানীতে এক হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬: অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য রাজস্ব ইস্যু’ শীর্ষক সেমিনারে এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা হয়, সমপরিমাণ অর্থ কর অব্যাহতির কারণে চলে যায় জানিয়ে তিনি বলেন, “কিন্তু সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ ঋণের বড় চাপ বা বোঝা আছে। এ অবস্থায় এভাবে কর অব্যাহতি দিয়ে টিকে থাকা সম্ভব নয়।”
নতুন করছাড় নীতিতে এই সক্ষমতা সংসদের হাতে থাকবে বলেও জানান তিনি।
নিয়মিত করদাতাদের উপর চাপ না বাড়িয়ে রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে এনবিআর প্রধান বলেন, “যারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তাদেরকে যথাযথ কর পরিশোধ করতে হবে।
“যেসব করদাতা রিটার্ন দাখিল করেননি, তারা নোটিশ পাচ্ছেন। প্রতিটি নন-ফাইলারই নোটিশ পাবেন, শুধু তা-ই নয়, তাদের ফাইলগুলো কর কর্মকর্তারা মূল্যায়ন করবেন এবং তাদের যথাযথ কর পরিশোধ করতে হবে।”
এনবিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১ কোটি ১৫ লক্ষের বেশি টিআইএনধারী রয়েছেন, কিন্তু তাদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই রিটার্ন দাখিল করেননি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাত্র ৮ শতাংশ নিবন্ধিত কোম্পানি আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছে করেছে।
যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্ম নিবন্ধক আরজেএসসি এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ২ লাখ ৮৮ হাজার পাবলিক ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধিত রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৪ হাজার ৩৮১টি রিটার্ন জমা দিয়েছে, যা মোটের মাত্র ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
যারা ফাঁকি দেন বা কর অব্যাহতি নেন, তাদের কাছ থেকে আদায়ের জন্য এখন কর কর্মকর্তাদের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়ার কথাও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।
“কমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হবে, টার্গেট দেওয়া হবে, এ বছর ও পরবর্তী বছরের জন্য। এতে তারা নন-ফাইলার্সদের (যারা রিটার্ন জমা দেন না) থেকে কী পরিমাণ কর সংগ্রহ করতে পারলেন, রিবেটার্সদের (ছাড় পাওয়া) থেকে কত কর সংগ্রহ করতে পারলেন- তা বোঝা যাবে”, বলেন এনবিআর প্রধান।
এনবিআরের ৯০ শতাংশ রাজস্ব উৎসে কর কর্তন এবং অগ্রিম কর হিসেবে আদায় হয়। কর কর্মকর্তারা মাত্র ১০ শতাংশ রাজস্ব সরাসরি সংগ্রহ করেন।
নতুন ব্যবস্থায় কর কর্মকর্তাদের দক্ষতারও প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে মত দেন এনবিআর প্রধান।