সরকারকে হোটেল, রেস্তোরাঁয় ভ্যাটের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। একইসঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে না এলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেস্তোরাঁ বন্ধের হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এই আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, ‘দুই বছরের বেশি সময় ধরে যেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকার করের আওতা না বাড়িয়ে বা কর ফাকি রোধ করার ব্যবস্থা না করে অর্থবছরের মাঝামাঝি হঠাৎ তিনগুণ ভ্যাট বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের উপর।’
৭০ শতাংশ রেস্তোরাঁ এখনও ভ্যাটের আওতার বাইরে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের ব্যয় কমিয়ে ও অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দিয়ে সরকার ঘাটতি মেটাতে পারে। আইএমএফ এর শর্ত মানতে গিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মত দেশের জনগণের উপর ইচ্ছে মত করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া কোনো পূর্ণাঙ্গ সমাধান হতে পারে না।’
ইমরান হাসান বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাত প্রত্যক্ষ কর। যে যত বড় ধনী, তাকে তত বেশি আয়কর দিতে হয় কিন্তু আমাদের দেশে করের আওতা না বাড়িয়ে ভ্যাটকে রাজস্ব আয়ের প্রধান হাতিয়ার করা হয়েছে। বর্তমানে ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে গড়ে সাড়ে তিন লাখ প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভ্যাট দিয়ে থাকে। এর বাইরে যে লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ খাতটি বিক্রয়ের উপর ভ্যাট ও আয়ের উপর কর প্রদান করে সুতরাং ভ্যাটের সঙ্গে ট্যাক্সেশনও জড়িত। রাষ্ট্র ৫৩ বছরে ব্যবসায়ীদের জন্য কাজ করেনি। তবে সরকার হাতেগোনা কিছু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করেছে। তারাই ফুলে ফেঁপে বড় হয়েছে।’
হোটেল, রেস্তোরাঁয় ভ্যাটের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বর্তমানে সাধারণ মানের এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) রেস্তোরাঁয় খাওয়ার জন্য ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এটি বেড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ হতে পারে। এছাড়া, নন-এসি হোটেলের ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআর জানিয়েছে, যে সব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করা হচ্ছে তার মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নেই বিধায় সর্বসাধারণের ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে না এবং মূল্যস্ফিতিতে প্রভাব পড়বে না। জনস্বার্থে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শুল্ক কর হারে ব্যাপক ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং জাতি হিসেবে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি ও হার যৌক্তিকীকরণের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh