চোরের কামড়ে হাত হারাতে বসেছিলেন দোকানদার

আলপনা আকতার শ্রাবণী
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৫২

তুরস্কের ৬০ বছর বয়সী এক দোকানদার তার বাঁ হাত প্রায় হারাতে বসেছিলেন। কারণ দোকান লুটের চেষ্টা করা এক চোর তার হাতে কামড় দিয়েছিল! কুকুর বা বিড়ালের চেয়ে মানুষের কামড় যে বেশি বিপজ্জনক হতে পারে, এ যেন তারই প্রমাণ।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের শুরুতে ইস্তাম্বুলের উসকুদার নামক এলাকায়। সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করার সময় দুজন মুখোশধারী চোর প্রবেশ করে। দোকান লুটের চেষ্টা করায় দোকানদার তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। লড়াইয়ের এক পর্যায়ে এক চোর পালানোর জন্য দোকানদারের হাতে শক্তভাবে কামড় দেয়।
ঘটনাটি গত বছর ঘটলেও এ বছর তুর্কি মিডিয়ায় তা প্রকাশিত হয়, যখন চিকিৎসকরা রোগীর চিকিৎসার বিবরণ বৈজ্ঞানিক জার্নালে শেয়ার করেন। প্রচণ্ড ব্যথায় দোকানদার চোরকে ছাড়তে বাধ্য হয় এবং চোরসহ তার সহযোগী পালিয়ে যায়। দুজন চোর এখনো ধরা পড়েনি।
প্রাথমিকভাবে তিনি স্থানীয় একটি ক্লিনিকে যান এবং হাতের ক্ষত চিকিৎসা করান। কিন্তু তার স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। জ্বর আসে এবং কাঁপুনি দেখা দেয়। এরপর তিনি সুলতান আবদুলহামিদ হান প্রশিক্ষণ ও গবেষণা হাসপাতালে যান। ডাক্তাররা জানান, চোরের কামড় থেকে সংক্রমণ হয়েছে।
পরবর্তী দুই সপ্তাহে সংক্রমণ বাড়তে থাকে, আকার বড় হয় এবং জীবনের ঝুঁকি তৈরি হয়। হাতের রং বদলে যায়, আকার দ্বিগুণ হয়। তখন ডাক্তাররা হাইপারবারিক অক্সিজেন থেরাপি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। এই থেরাপি সংক্রমিত ক্ষত দ্রুত সারতে সাহায্য করে। এই থেরাপি ব্যবহার করে ডাক্তাররা তার হাত বাঁচাতে সক্ষম হন। তিন মাসের ফিজিওথেরাপির পর তিনি পুরো হাতের কার্যকারিতা ফিরে পান।
ড. ইয়াভুজ আসলান বলেন, ‘মানব মুখের ব্যাকটেরিয়া খুব বিপজ্জনক। এটি সাবকিউটেনিয়াস টিস্যুতে প্রবেশ করলে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীর হাতের আকার অনেক বেড়ে গেছে, যা চিকিৎসাকে জটিল করেছিল।’
এই ঘটনা চিকিৎসা জগতে নথিভুক্ত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে দোকানদার আবারও চুরির মুখোমুখি হন, তবে এবার কোনো কামড়ের ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনা চিকিৎসা জগতে নথিভুক্ত হয়েছে। তার অভিজ্ঞতা মানব কামড়ে বিপদের সচেতনতা দেখানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়।
সূত্র : অডিটি সেন্ট্রাল