
প্রতীকী ছবি
এক
পরিচালক এক অভিনেতাকে তার পাট বুঝিয়ে দিচ্ছেন
তুমি জঙ্গলের ভিতর দিকে ছুটছো। এই সময় একটা বাঘ তোমাকে তাড়া করেছে।
সত্যি বাঘ স্যার?
অবশ্যই আমার ছবিতে কোনো নকলের কারবার নেই।
কিন্তু ...
ভয়ের কিছু নেই। বাঘটা যখন তোমাকে ধরা ধরা অবস্থা হবে, তখন ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে বাঘটাকে গুলি করা হবে এবং বাঘ সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যাবে।
সত্যি তো স্যার?
সত্যি সত্যি... তুমি রেডি হয়ে যাও। বলা যায় না এই শটটার জন্য তুমি অস্কার পেয়ে যেতে পার।
সেই অভিনেতা অস্কারের কথা শুনে একটু চাঙ্গা হয়ে ওঠে যেন। রেডি হয়। পরিচালক লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন বলতেই তাকে ছুটতে শুরু করতে হবে। তার বুকটা ধড়ফড় করছে। আর মাঝে মাঝে অস্কারের ছবিটা ভেসে উঠছে।
রেডি? পরিচালক চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন...’ দৌড়াও!!
অভিনেতা ছুটতে শুরু করল। পেছনে খাঁচা খুলে বাঘও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দু’জনেই জঙ্গলের গাছপালা ভেঙে পড়ি-মরি করে ছুটছে।
সহকারী পরিচালককে দায়িত্ব দিয়ে এক কাপ কফি নিয়ে বসলেন পরিচালক।
কিছুক্ষণ পর। সহকারী পরিচালক ফিরে এলো।
কি বাঘের স্যুটিং কমপ্লিট?
জি স্যার।
কেমন হলো স্যুটিংটা?
স্যার একটা ব্যাড নিউজ আর একটা গুড নিউজ আছে। কোনটি আগে বলব?
ব্যাড নিউজটাই আগে শুনি।
স্যার ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে সঠিক সময়ে গুলি করা হয়েছিল, কিন্তু ...
কিন্তু??
কিন্তু গুলিটা স্যার বাঘের গায়ে না লেগে আমাদের ছুটন্ত অভিনেতার গায়ে লেগেছে।
কি ক্কি বলছ? তাহলে গুড নিউজটি কি?
স্যার বাঘের খাওয়ার জন্য যে আস্ত ছাগলটা অর্ডার করা হয়েছিল, সেটা ক্যান্সেল করা গেছে।
দুই
চরম রোমান্টিক কিন্তু বিয়োগান্তক ছবির স্যুটিংয়ের সেট ফেলা হয়েছে এক দুর্গম এলাকায় পাহাড়ের ধারে। সব রেডি। নায়ক এলেই স্যুটিং শুরু হবে এবং আজই শেষ করা হবে স্যুটিং। পরিচালক, সহকারী পরিচালক, লাইটম্যান, ক্যামেরাম্যান ও মেকাপমান সব রেডি। অতঃপর নায়ক চলে এলেন। পরিচালক শেষ সিনটা বুঝিয়ে দিলেন নায়ককে।
খুবই সিম্পল শট। নায়িকা আপনার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এখন আপনি হতাশায় আত্মঘাতী হবেন। আপনার চোখে-মুখে ফুটে উঠবে ব্যর্থতার গ্লানি। আপনি আস্তে করে হেঁটে ওই পাহাড়ের কিনারে যাবেন। আকাশের দিকে একটা ব্ল্যাংক লুক দেবেন। তারপর...
তারপর?
তারপর ঝাঁপ দেবেন নিচে
নিচে কি পানি?
না না পাথর... হার্ডরক। তবে ভয় নেই। নিচে আপনার জন্য জাল পাতা আছে।
ওহ তাই বলুন।
তাহলে আপনি রেডি?
হ্যাঁ রেডি
ওকে লাইট ক্যামেরা ... পরিচালক চেঁচিয়ে ওঠেন।
স্যার এক মিনিট। মেকাপমান হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল। ছুটে গেল নায়কের কাছে। সবাই ভাবল হয়তো মেকাপম্যান শেষ মুহূর্তে কোনো ফেসিয়াল টাচ দিবে; কিন্তু তা না মেকাপম্যান নায়কের কাছে গিয়ে ফিস ফিস করে কানে কানে বলল, ‘স্যার আপনাকে একটু কষ্ট দেব।’
কি কষ্ট?
আমার মা-বাবাকে একটা মেসেজ দেবেন, মেসেজটা হচ্ছে, আমার একটা মেয়ে হয়েছে গতকাল, নরমাল ডেলিভারি। মেয়ের নাম রেখেছি রাখী।
মানে! কি বলছ? তোমার বাবা-মা কোথায় থাকেন??
স্যার উনারা দু’জনেই মারা গেছেন। একটু পরেইতো উনাদের সঙ্গে আপনার স্যার দেখা হবে... তাই ...
এসব কি বলছ তুমি?
স্যার, মানে আপনি তো একটু পরেই পাহাড় থেকে ঝাঁপ দেবেন। নিচে ওই জালের লোকজন আসেনি। তাই বলছিলাম...মেসেজটা যদি কষ্ট করে...
পরিচালক চেচিয়ে উঠলেন, ‘লাইট ক্যামেরা... অ্যাকশন!!