
মার্ক টোয়েনের ক্যারিকেচার
বিখ্যাত আমেরিকান লেখক মার্ক টোয়েন নিজেকে নিয়ে কৌতুক করতেন, এ বিষয়ে তাঁর জুড়ি ছিল না। শুধু নিজেকে নিয়ে নয়, জীবনের বিভিন্ন সূক্ষ্ম ও জটিল বিষয় নিয়েও নির্বিকার ঠাট্টা করতে পারতেন। তিনি শুধু দুর্দান্ত লেখনীর জন্যই পরিচিত ছিলেন না, দারুণ রসবোধও তাঁকে অনন্য করেছিল জনপ্রিয়তার আসরে।
মার্ক ব্যক্তিচরিত্রের গূঢ় বাস্তবতার কথাগুলো বলে ফেলতেন হাসতে হাসতে, ‘মানুষের সামনে মুখ বন্ধ রাখাই ভালো- যাতে তারা ভাবতে পারে, আপনি একটা বোকা। মুখ খুলে সেটা প্রমাণ করে দেওয়ার কী দরকার!’ প্রহসন করার ক্ষেত্রে মার্ক টোয়েন ছাড় দিতেন না রাষ্ট্রব্যবস্থা বা রাজনীতির পঙ্কিলতাকেও, ‘মনে করুন, আপনি একটা উজবুক, আবার মনে করুন, আপনি কংগ্রেসের সদস্য। আমি তো এটা নিজেকে বারবার মনে করিয়ে দিই।’
কেবল কথা বলার খাতিরে বা উদ্ধৃতি হিসেবেই যে মার্ক টোয়েনের হাস্যকথার ফুলঝুরি ছুটত, তা কিন্তু নয়। বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকেও তিনি সামাল দিতেন দুষ্টুমির ছলেই। একবার এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার আগে একটি নতুন শহরে গেলেন মার্ক টোয়েন। সেখানে গিয়ে শেভ করার জন্য ঢুকলেন একটি স্থানীয় সেলুনে এবং নাপিতকে ডেকে বললেন যে তিনি এই শহরে প্রথমবার এসেছেন।
নাপিত টোয়েনকে চিনতেন না। তাই প্রথমবার আসা খদ্দেরের সঙ্গে আলাপচারিতায় বললেন, ‘আপনি বেশ ভালো দিনে এসেছেন।’
‘তা-ই নাকি?’
‘হ্যাঁ, খ্যাতিমান লেখক মার্ক টোয়েন আজ রাতে এখানে বক্তৃতা দেবেন। আপনি নিশ্চয়ই যেতে চাইবেন সেই অনুষ্ঠানে?’
‘আমার তো তা-ই মনে হয়।’
‘আপনি কি টিকিট পেয়েছেন?’
‘না, এখনো পাইনি।’
‘ওহহো, সব টিকিট তো বিক্রি হয়ে গেছে। আপনাকে তাহলে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।’
‘এটাই আমার ভাগ্য।’ টোয়েন দীর্ঘশ্বাস ফেললেন, ‘ওহ ভদ্রলোক বক্তৃতা দেওয়ার সময় আমাকে সব সময় দাঁড়িয়েই থাকতে হয়।’