খাবারে অরুচি ছোটদের জন্য বিষয়টা যতটা স্বাভাবিক, বড়দের জন্য ততটা নয়। তাদের অরুচির সঙ্গে নানান জটিলতা ও সমস্যার সৃষ্টি হয়। বড়দের খাবারে কেন অরুচির হয়:
শারীরিক অসুস্থতা: দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্ষুধামান্দ্য হয়ে থাকে। মাইগ্রেন, ফাইব্রোমায়ালজিয়া এবং আর্থ্রাইটিসের মতো রোগের কারণেও ক্ষুধামান্দ্য হতে পারে।
ডায়াবেটিস: যাদের ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের নার্ভ দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে পরিপাকতন্ত্র খুব ধীরে ধীরে খাবার পরিপাক করে। এটাকে গ্যাস্ট্রোপেরেসিস বলা হয়। গ্যাস্ট্রোপেরেসিসের কারণে খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হয়।
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, জ্বর, সর্দি, ইউরিন ইনফেকশন ক্ষুধামান্দ্যর সাধারণ কারণ। শরীরে যখন কোনো ধরনের ইনফেকশনজনিত সমস্যা দেখা যায়, তখন তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধামান্দ্যও দেখা যায়।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষুধা কমে যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে ওপিওড পেইনকিলার, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস, অ্যান্টিবায়োটিক, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ওষুধ। ক্যানসারের চিকিৎসাও ক্ষুধা হ্রাসের কারণ হতে পারে, একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে ক্যানসারে আক্রান্ত প্রায় ৬০ শতাংশের ক্ষুধা হ্রাস পায়। এ ছাড়া কেমোথেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপির মতো চিকিৎসার ফলে খাবারে অরুচি এবং বমি বমি ভাব হতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি: মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষুধার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। চিকিৎসকরা বলেন, যখন কেউ মানসিক চাপে থাকেন তখন মস্তিষ্ক অ্যাড্রেনালিন হরমোন নিঃসরণ করে। এই হরমোন পাচনতন্ত্রকে ধীর করে দেয়।
হজমে সমস্যা: শরীর যদি ঠিকমতো খাবার হজম করতে না পারে তখন খাবারের প্রতি অনীহা দেখা যায়। তাই খেতে অনীহা হলে প্রথমেই দেখতে হবে খাবার ঠিকমতো হজম হচ্ছে কিনা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে গ্যাস্ট্রোলোজিস্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
বয়স: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধারও পরিবর্তন হয়। বয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষুধা হ্রাস পায়। ফলে তারা কম খাবার খায় এবং এতে ওজন হ্রাস পায় ও পুষ্টিহীনতায় ভোগে।
যা করতে হবে:
পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়া, পছন্দের খাবার রান্না করা, মাঝে মাঝে রেস্টুরেন্টে গিয়ে পছন্দের খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ক্ষুধামান্দ্য কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে একটু পর পর অল্প খাবার খেয়ে চেষ্টা করতে পারেন। অল্প খাবার সহজেই হজম হয়। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করলে ক্ষুধামান্দ্য নিরাময় হয়। যে খাবার খাচ্ছেন তা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি এবং ক্যালরি পাচ্ছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। এছাড়া এক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ডায়াবেটিস শারীরিক অসুস্থতা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ মানসিক স্বাস্থ্য বয়স হজমে সমস্যা খাবারে অরুচি বয়স্ক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh