শারীরিকভাবে ফিট রাখতে কে না চায়। তরুণ থেকে বয়স্ক-সবারই নিজেকে সুঠাম রাখার লোভ আছে। এ জন্য ডায়েটের বিকল্প নেই। অনেকেই অনুসরণ করেন তা। মেদমুক্ত থাকতে কেউ মেনে চলেন কঠোর ডায়েট। অনেকে ডায়েট করতে গিয়ে মানেন না কোনো নিয়ম-কানুন। এতে হিতে বিপরীত হয়। ডায়েট চার্ট তৈরির আগে জানা উচিত কোন বয়সে কোন ধরনের ও কতখানি পুষ্টি শরীরে প্রয়োজন। সেই সঙ্গে ক্যালরি গ্রহণ ও ঝরানোর হিসাব রাখাটাও প্রয়োজন। বয়স, ওজন ও পরিশ্রমের ধরন অনুযায়ী ডায়েট তৈরির সময় এই হিসাব প্রয়োজনীয়। কারণ ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বয়স ভেদে পাল্টে যায়।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর রোজ ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ ক্যালরি গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের বেলায় গ্রহণ করা উচিত ২ হাজার থেকে ৩ হাজার। আর শিশুরা রোজ ১০০০ ক্যালরি গ্রহণ করতে পারলেই যথেষ্ট। ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ৩ হাজার ২০০ এবং ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের জন্য ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ ক্যালরি প্রয়োজন। সে কারণেই বয়স ভেদে ডায়েট চার্ট বানালে এগুলো মাথায় রেখেই বানাতে হবে। বয়স ভেদে নারী-পুরুষের শরীরে পুষ্টি উপাদানের চাহিদাও ভিন্ন হয়। একজন মেয়ে যখন কৈশোরে পদার্পণ করে তখন হরমোন ও শারীরিক গঠনসহ নানা ধরনের পরিবর্তন হয়। এ সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বাড়তি আয়রন গ্রহণ।
২০ থেকে ৩০ বা তার বেশি বয়সী নারীদের ডায়েট চার্টও আলাদা। তাদের শরীরে পুষ্টির সঙ্গে বাড়তি ক্যালসিয়াম ও ফলিক অ্যাসিড প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া এই বয়সী নারীদের অনেকেই মা হন কিংবা মা হওয়ার প্রস্তুতি নেন। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্যও ফলিক অ্যাসিড প্রয়োজনীয়। ৪০-৫০ বছরের নারীরও ডায়েট চার্ট আলাদা হয়। এই বয়সী নারীর মেনোপজ শুরু হয়। এ সময় শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন আসে। ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। সে কারণে তাদের ডায়েট চার্টে আয়রন ও প্রোটিন রাখাটা আবশ্যক।
কর্মজীবী পুরুষের প্রতি কেজি ওজনের জন্য ২৫ থেকে ৩০ ক্যালরি গ্রহণ করতে হয়। যদিও ওজন উচ্চতা ও বয়স ভেদে এই পরিমাণে সামান্য হেরফের আসে। প্রতিদিনের ডায়েটে কর্মজীবী পুরুষের জন্য প্রোটিন থাকাটা বাঞ্ছনীয়। প্রতি কেজি ওজনের জন্য একজন পুরুষকে ১ থেকে ১ দশমিক ২ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতে হয়। এতে মানসিক অসুস্থতা ও হাড়ের ক্ষয়ও প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। বাইরের তেল-চর্বিযুক্ত খাবার শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। এতে স্ট্রোক, রক্তের কোলেস্টেরল ও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায় এবং অ্যাসিডিটি হয়। প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, দুধ, ডিম থাকতে হবে। তাই অপরিকল্পিত ডায়েট অনুসরণ না করে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে ডায়েট করা উচিত। তবেই সুস্থ সুন্দর থাকা সম্ভব।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ডায়েট চার্ট বয়স ভেদে ডায়েট ডায়েট স্বাস্থ্য
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh