বয়স ৪০ পার হলে কি রোজ ডিম খাওয়া উচিত

ডিম একটি সহজলভ্য ও উন্নতমানের আমিষ জাতীয় খাদ্য। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন। যা দেহগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই কারও মনে। 

তবে অনেকেই বুঝতে পারেন না বয়স ৪০ পেরিয়ে গেলে নিয়মিত ডিম খাওয়া ঠিক কি না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের খাদ্য তালিকায় উপস্থিত খাদ্যগুলোর মধ্যে ডিম প্রোটিনের অন্যতম সেরা একটি উৎস। একটি সিদ্ধ ডিমে ছয় গ্রামেরও বেশি প্রোটিন থাকে, স্নেহপদার্থ থাকে ৫ গ্রামের একটু বেশি। পাশাপাশি এতে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, কোলেস্টেরল থাকে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম।

ডিমের উপকার হরেক রকমের। বিশেষত বয়স্ক মানুষদের পেশীর ক্ষয় পূরণ করতে ডিম অত্যন্ত কার্যকর। দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন না থাকলেই পেশীর গঠনে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে ডিম পূরণ করতে পারে সেই ঘাটতি। 

তাছাড়া এটি সহজ পাচ্যও বটে। এতে লিউসিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে যা পেশী গঠনে অতি প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি ডিমে থাকে ভিটামিন ডি ও ওমেগা-৩-ফ্যাটি অ্যাসিড।

অনেকেই বয়স ৪০ পেরিয়ে গেলে কোলেস্টেরলের কথা ভেবে ডিম খাওয়া বন্ধ করে দেন।

কিন্তু আধুনিক গবেষকদের একাংশ বলছেন, সুস্থ মানুষদের ক্ষেত্রে পরিমিত পরিমাণে ডিম খাওয়া খুব একটা বিপজ্জনক নয়। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে একজন সুস্থ ব্যক্তি খাদ্যের মধ্য দিয়ে মোটামুটি দৈনিক ৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারেন। কাজেই রোজ একটি করে ডিম খেলে বিশেষ অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

আর বয়স ৫০ পেরিয়ে গেলে সপ্তাহে তিনটি ডিম খাওয়া যেতে পারে। যারা তবুও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না তারা ডিম খেতে পারেন কুসুম বাদ দিয়ে। 

তবে মনে রাখবেন সবার শরীর সমান নয়। কাজেই কোনও অসুস্থতার লক্ষণ থাকলে বা পুষ্টি সংক্রান্ত কোনও দ্বিধাবোধ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডিম খাওয়াই বিচক্ষণতার পরিচয়। 

কয়টা ডিম শরীরের জন্য ভাল

বেশিরভাগ ডাক্তারই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় ডিম রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন, বেশিরভাগ পুষ্টিকর উপাদান প্রাকৃতিকভাবে যেসব খাবারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো ডিম।

ব্রিটিশ ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের ড. ফ্র্যাঙ্কি ফিলিপস্ বলেছেন, দিনে একটা - এমনকি দুটো ডিমও স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। বেশি ডিম খাওয়ায় ভয়ের কোনও কারণ নেই। এখানে সতর্কবাণী শুধু একটাই - এক ধরনের খাবার বেশি খেতে গিয়ে অন্য খাবারে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব পুষ্টি রয়েছে সেগুলো বাদ দেওয়া ভুল হবে।

তিনি আরও বলছেন, ডিম যদিও প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ একটা উৎস, কিন্তু একটা ব্যাপারে সতর্ক হবে যে আমাদের অন্যান্য খাবার থেকেও আমরা প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাই - যা অনেক সময়ই শরীরের জন্য দৈনন্দিন প্রয়োজনের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি। কাজেই অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //