Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য

Icon

লাবণী মণ্ডল

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ১৮:১৪

কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য

সব জায়গায় কর্মক্ষেত্রের প্রভাব রয়েছে। প্রতীকী ছবি

ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় জীবন-সব জায়গায় কর্মক্ষেত্রের প্রভাব রয়েছে। দিনের একটা বড় অংশ আমরা কর্মক্ষেত্রে অবস্থান করি। দেখা যায়, যখন বাসায় ফিরি, তখন যদি কর্মক্ষেত্রে কোনোভাবে বিরক্ত থাকি, সে কারণে যদি মনের মধ্যে কোনো বিষণ্ণতা বা অস্থিরতা থাকে, সেটা ব্যক্তির ওপর যেমন প্রভাব ফেলে, তেমনি পরিবারের ওপরও ফেলে। নারী হলে স্বামীর ওপর প্রভাব পড়ছে। পুরুষ হলে স্ত্রীর ওপর প্রভাব পড়ছে। কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তির মানসিক অবস্থা গোটা পরিবারকেই প্রভাবিত করে। 

কর্মক্ষেত্রে মানসিক অস্থিরতা শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার মূল কারণ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের লিঙ্কডইনে পরিচালিত অনানুষ্ঠানিক জরিপে দেখা গেছে, ১২২৮ জন উত্তরদাতার মধ্যে ৮৭ শতাংশ জানিয়েছে, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী, ক্লায়েন্ট, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা নেতিবাচক কর্মপরিবেশের কারণে বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা অনুভব করছেন; যেমন-মাইগ্রেন, বমি বমি ভাব, চুল পড়া, ঘুম কমে যাওয়া, ওজন হঠাৎ কমে বা বেড়ে যাওয়া, মুড সুইং ও প্যানিক অ্যাটাক। তাই কর্মক্ষেত্রে মানসিক সুস্থতা ধরে রাখা ভীষণ জরুরি এবং এজন্য যা করা উচিত...

কাজে মনোনিবেশ
নির্দিষ্ট ও প্রয়োজনীয় কাজে ফোকাস করুন এবং কীভাবে এ সম্পর্কিত কর্মীদের আরও ভালোভাবে সহায়তা করতে পারেন সে চেষ্টা করুন। কোনো কোম্পানির একটি বিভাগ থেকে অপরটির আচরণ হয়তো অনেক ভিন্ন। তবে সব বিভাগের মধ্যে সহযোগিতার ভাব ও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ ও নমনীয়তা নিশ্চিত করা জরুরি। আর এ ক্ষেত্রে নিজের কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। তাহলে অন্যের কথায় কান দিয়ে ভিন্ন কোনো পথে এগোতে হবে না। 

ভালো কর্মী যুক্ত করা
কোম্পানিগুলো অভ্যন্তরীণ ভালো কর্মীদের এড়িয়ে বাইরের বিশেষজ্ঞ বা একজন ব্যবসায়িক ইউনিটের পরিচালককে কর্মশক্তি বাড়ানোর জন্য যুক্ত করে। এতে গতিশীলতা-সৃজনশীলতার পরিবর্তে কর্মীদের জন্য কাজ বোঝা হয়ে উঠতে পারে। এজন্য কর্মীর মানসিক স্বাস্থ্য কোন অবস্থায় আছে তা বোঝার জন্য সবচেয়ে ভালো কর্মীদের কর্মদক্ষতা ও কর্মপরিবেশ উন্নয়নে যুক্ত করা উচিত।

প্রযুক্তির ব্যবহার
প্রথমেই স্বীকার করতে হবে, প্রযুক্তি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করবে না। বরং প্রযুক্তি এ সমস্যার অন্যতম অংশ। স্মার্টফোন, অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা মোবাইল ফোনে প্রতিটি কথোপকথন আমাদের হতাশার অনুভূতি ও মনোযোগের ঘাটতি বৃদ্ধি করে। কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য মোকাবেলায় এমন কৌশল দরকার, যা প্রযুক্তির নেতিবাচকতা এড়িয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি রোধ করবে।

প্রজন্ম এবং জেন্ডার গ্যাপ
কর্মক্ষেত্রে প্রজন্মের সঙ্গে প্রজন্মের একটি ব্যবধান থেকে যায়। তরুণদের সঙ্গে একটু বেশি বয়সী সহকর্মীরা স্বাভাবিক মনের ভাব প্রকাশ করতে সংকোচ বোধ করে। কম বয়সীদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য। আমাদের সমাজে বয়সের ব্যবধান অনেক অনুভূতির প্রকাশ কেড়ে নেয়। সেই সঙ্গে নারী-পুরুষের মধ্যে ব্যবধানও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা অনেক কম। সেখানে পুরুষের সঙ্গে স্বাভাবিক ও সাধারণ কথাবার্তা বা আলাপ-আলোচনা খুব জরুরি। অথচ এ সমাজে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক বা কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে একটি অদৃশ্য দেয়াল সর্বত্রই দেখা যায়। এ দেয়াল যত ক্ষীণ হবে কর্মপরিবেশ তত বেশি প্রাঞ্জল হবে। 

নেতিবাচকতা এড়িয়ে যান
একজন কর্মীরও যদি কোনো কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের বিঘ্ন ঘটে, সেটি গোটা অফিসে প্রভাব ফেলে। তাই প্রতিষ্ঠানের যে স্তরেরই থাকুন না কেন, মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে অবিচল থাকতে হবে। সংস্কৃতি, কর্মক্ষমতা, উৎপাদনশীলতা, অভিজ্ঞতা-এ সবই কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। আর এই মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে কর্মক্ষেত্রে যেমন কর্মীর কর্মক্ষমতা কমে আসে; তেমনি এটি পারিবারিক ও সমাজ জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই নেতিবাচক চিন্তা এড়িয়ে যাওয়া জরুরি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫