
প্রতীকী ছবি
চারদিকে সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী, কিন্তু বেতন? সে তো জ্যামিতির নিয়ম মেনে সরলরৈখিক গতিতে চলছে! অথচ আলু-পটোল থেকে শুরু করে ডিজেল-পেট্রল, এমনকি বুয়ার বেতনও আকাশছোঁয়া। তাই উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই যুগে সংসার চালানো যেন ক্রমেই দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। তা হলে করণীয় কী? নিজের ডায়েটের সঙ্গে খরচের ডায়েট করতে হবে।
কিন্তু খরচের ডায়েট আবার কী! এমন শব্দ হয়তো অনেকে শোনেননি। আসলে খরচের ডায়েট বলতে বোঝায় যথাযথ পরিকল্পনা করে অর্থ খরচ করা। যদিও বর্তমানে বাজার খরচ কমানো আসলেই খুব কঠিন কাজ। তবে একটু ভেবেচিন্তে, পরিকল্পনা করে খরচ করলে অসম্ভব নয়। শুধু দরকার নিজের মাথাটাকে একটু খাটানো। আর এ কথা যে কেউ মানবেন যে, সংসারের অর্থনৈতিক ফিটনেস ধরে রাখতে এর কোনো বিকল্প নেই।
কীভাবে খরচ কমাবেন
মাসের শুরুতেই খাতা-কলম নিয়ে বসে পড়ুন। সারা মাসের জমা-খরচের হিসাব করুন। বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিল, যাতায়াত খরচ, ড্রাইভারের বেতন, বাড়ি ভাড়া, বীমা প্রিমিয়াম ইত্যাদি খরচের জন্য আগে থেকে টাকা আলাদা করে রাখুন। মাসের শুরুতেই এই খরচগুলো মিটিয়ে ফেলা ভালো।
এবার নিজের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন, এটা খুব জরুরি। যেমন ধরুন সামনের মাসে বিয়েবার্ষিকীর পার্টি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তবে কোনো রেস্টুরেন্টে না গিয়ে বাড়িতেই বন্ধুদের নিয়ে পার্টি করতে পারেন। তা হলে খরচ অনেক কমে যাবে।
শপিংয়ের ক্ষেত্রে অনলাইনের সাহায্য নিতে পারেন। প্রায় প্রতিটি অনলাইন শপিং সাইট নানা রকমের অফার নিয়ে বসে আছে। রেস্তোরাঁ, মুভি টিকিট, ট্রাভেল টিকিট, বিউটি প্রোডাক্ট, পোশাকসহ প্রায় সবকিছুই অনলাইনে বেশ ছাড়েই কিনতে পারবেন। কোনো ইলেকট্রিক পণ্য কেনার ক্ষেত্রে এমন অপশন নিতে পারেন।
খরচ ডায়েট করার অন্যতম শর্ত হলো অহেতুক খরচ এড়িয়ে চলা। যেমন ঋণ নিতে চাইলে ভালো করে যাচাই করে ব্যাংক বাছাই করুন। যেখানে সবচেয়ে লাভজনক কিস্তিতে টাকা শোধ করার সুযোগ থাকবে সেই ব্যাংক বেছে নিন। তবে টাকা জমানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন আয় করে বাড়তি সুবিধা পাবেন কি না।
যারা কর্মজীবী নয়
যদি চাকরিজীবী না হন, তা হলে খরচ কমানোর সঙ্গে সঙ্গে পার্ট টাইম কাজ করার চেষ্টা করুন। শখের কোনো কাজ শিখতে পারেন। যেমন রান্নার শখ থাকলে বেকিং বা কুকিংয়ের কাজ শিখতে পারেন, আায়ের ভালো উৎস হতে পারে। ছোট করে হলেও কোনো হোম বিজনেস শুরু করতে পারেন। বর্তমানে এই ধরনের ব্যবসা বেশ জনপ্রিয়। এখন থেকে টাকা জমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
খেয়াল রাখুন
প্রত্যেকের ইমার্জেন্সি ফান্ড থাকা উচিত। তা হলে জরুরি প্রয়োজনে বন্ধুর মতো কাজে দেবে। এই ফান্ডে সব সময় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রাখুন। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ এজন্য লেট পেমেন্ট চার্জ এবং দৈনিক সুদ দিতে হয়। সন্তানের কথা ভাবুন, ওদের জন্য শিশু বিমা পলিসি, এডুকেশন পলিসি ইত্যাদি বীমা করে রাখতে পারেন। স্বর্ণ ও জমি কিনে রাখা লাভজনক। তাই সুযোগ হলে এগুলো কিনে রাখতে পারেন।