
মৌসুম শুরুর আগেই প্রস্তুতি নিতে থাকেন গাছিরা। কে কত আগে গাছ প্রস্তুত করতে পারেন, কার গাছ কত ভালোভাবে চাঁচ দেওয়া হলো এসব নিয়ে আলোচনা চলে নিজেদের মধ্যে।

তবে বর্তমানে চিরায়ত সেসব দৃশ্য চোখে পড়ে না খুব সহজেই। হারিয়ে যেতে বসেছে সুস্বাদু খেজুরের রস। নতুন প্রজন্মের এসব দৃশ্য অনেকটাই অপরিচিত। অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে খেজুরের রসের স্বাদ থেকে।

খেজুর গাছ কাটার পেশায় জড়িতরা পেশা বদল করে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়। সে কারণে খেজুরের রস এখন সোনার হরিণ। শিশির পড়া সকালে কম্বল পেঁচিয়ে বিছানার উপর থেকে আর শোনা যায় না খেজুরের রস বিক্রির ডাক-হাক।
কুয়াশার দখলে তখনো সকাল। ঘুম ভাঙেনি সূর্যের। শেষ হয়নি আলো-আঁধারির যুদ্ধও। মাঠের কোণায় একটি ছায়ামূর্তি দেখা যায়। দূর থেকে ভেসে আসে ‘র-অ-অ-অ-স খেজুরের রস’। ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয় অবয়ব। কাঁধের ভারের দুই পাশে দুটি মাটির কলস ঝুলছে। প্রত্যাশিত সেই মুখ দেখেই শিশু-কিশোররা ‘দে ছুট’। কারো হাতে জগ কারো হাতে পাতিল। পাখিদের সঙ্গে মিশে যায় শিশু-কিশোরের কোলাহল। মুখর হয়ে উঠে বাড়ির উঠান। শীতের বাংলায় অতি পরিচিত এ দৃশ্য। গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়ায় এখন দেখা মিলে না সারিসারি খেজুর গাছ। তাই মিলছেও না খেজুরের রস।